মোবাইলের লোভেই বন্ধুকে পুড়িয়ে মারল হায়দরাবাদের কিশোর!


মোটরবাইক কিনতে বিস্তর ধারদেনা করতে হয়েছিল। সেই দেনা শোধ করতে নিজের বন্ধুকেখুন করে তার দামি মোবাইল নিয়ে পালাল হায়দরাবাদের এক কিশোর।ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বিকেলে উপ্পল এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ডি প্রেম(১৭)। সোমবার তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। প্রেমকে খুনের অভিযোগে তার বন্ধুএস প্রেম সাগরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

উপ্পল পুলিশ জানিয়েছে, রমন্তপুরের বাসিন্দা প্রেমশুক্রবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল। কলেজ থেকে ফিরে বন্ধুর সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছে বলে সে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফেরেনি সে। উদ্বিগ্ন বাড়ির লোকজন পরের দিন থানায় গিয়ে সব জানিয়ে মিসিং ডায়েরি করেন। এর পর তদন্তে নামে পুলিশ। বহু তল্লাশির পর সোমবার উপ্পলের শহরতলি এলাকা আদিবাটলা থেকে উদ্ধার হয় তাঁর পচাগলা আধপোড়া দেহ। এর পর তদন্তকারীদের সন্দেহ হয় তার বন্ধুসাগরের দিকে।

সাগরকে জেরা করতেই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনাটা। পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমের এলাকাতেই থাকে সাগর। দু'জনের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ছিল। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ প্রেমের সঙ্গেই কলেজে যায় সে। এর পর তাকে বাড়িতেও পৌঁছে দেয় সে। এর কিছু ক্ষণ পরেই প্রেমকে ফোন করে সাগর।বন্ধুর ডাকেক্রিকেট খেলার অজুহাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে প্রেম। এর পর তাকে মোটরসাইকেলে বসিয়ে রওনা দেয় সাগর। তার সঙ্গে একটি লাঠিও ছিল। পথে একটি পেট্রল পাম্প থেকে এক লিটার পেট্রলও কেনে সে। এর পর আদিবাটলায় একটি নির্জন জায়গায় প্রেমকে নিয়ে গিয়ে তাকে আক্রমণ করে। প্রথমে মারধর, এর পর লাঠি দিয়ে বন্ধুর মাথায় ক্রমাগত আঘাত করতে থাকে সাগর। অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়ায়বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে যায় প্রেম। এর পর বন্ধুর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সাগর। ওই আগুনে নিজের ডান পায়েও ক্ষতের সৃষ্টি হয় সাগরের। এর পর প্রেমের দামি মোবাইল নিয়ে সেখান থেকে চম্পট দেয় সাগর।

পুলিশ জানিয়েছে, "তদন্তে নেমে প্রেমের মোবাইল কল রেকর্ড ঘেঁটে দেখা হয়। সেখান থেকে পাওয়া সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতেই সন্দেহ হয় সাগরের দিকে। এর পর তার বাড়ি থেকে সাগরকে গ্রেফতার করা হয়।" পুলিশের দাবি, জেরার মুখে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে সাগর। মোটরবাইক কিনতে এক জনের থেকে অনেক টাকাপয়সা ধার করেছিল সে। সেই দেনা শোধ করতেই বন্ধুর দামি মোবাইলের দিকে চোখ পড়েছিল তার। ইচ্ছে ছিল, ওই মোবাইল বিক্রি করেই ধারদেনা শোধ করবে সে। সে জন্য প্রেমকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সাগর।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমের আধপোড়া দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সাগরের বিরুদ্ধে বন্ধুকে অপহরণ, খুন-সহ প্রমাণ লোপাটের মতো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।