কাশ্মীরে সেনার গুলিতে নিহত কিশোরী-সহ ৩


হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর আগে ফের উত্তাল হল উপত্যকা। আজ দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে সেনার গুলিতে এক কিশোরী-সহ তিন জন নিহত হয়েছেন। তবে অশান্তি সত্ত্বেও শান্তিপূর্ণ ভাবেই চলছে অমরনাথ যাত্রা।

পুলিশ জানিয়েছে, কুলগামের হাউরা এলাকায় আজ সেনার টহলদারি দলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন স্থানীয়দের একাংশ। সেনার গুলিতে আট জন আহত হন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মধ্যে তিন জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সেনার তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রায় চার-পাঁচশো বিক্ষোভকারী সেনার গাড়ি লক্ষ্য করে পেট্রল বোমা ও পাথর ছোড়ে। পরে গুলিও চালায় অজ্ঞাতপরিচয় জঙ্গিরা। ফলে বাধ্য হয়ে গুলি চালায় সেনা।

নিহতদের মধ্যে রয়েছে ১৬ বছরের কিশোরী আন্দলিব জান। পুলিশ জানিয়েছে, আন্দলিব স্থানীয় এক বেসরকারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা স্থানীয় আপেল ব্যবসায়ী। গোলমালের সময়ে সে কী ঘটছে দেখতে বাড়ির বাইরে এসেছিল। নিহত বাকি দু'জনের নাম শাকির আহমেদ খান্ডে ও ইরশাদ আহমেদ। গোলমালের জেরে অনন্তনাগ, কুলগাম, শোপিয়ানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় জারি হয়েছে কার্ফুও। বিকেলে শ্রীনগরে সিআরপিএফের একটি দলের উপরে গ্রেনেড হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় জঙ্গিরা। তাতে এক সিআরপিএফ জওয়ান আহত হয়েছেন।
২০১৬ সালের ৮ জুলাই নিহত হয় হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানি। তার মৃত্যুদিবসকে সামনে রেখে এ বারও কাশ্মীরে বড় ধরনের হিংসা ও বিক্ষোভের ছক কষা হচ্ছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। উপত্যকায় হরতালের ডাক দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। হিজবুল মুজাহিদিন নেতা সৈয়দ সালাউদ্দিনও কাশ্মীর ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে 'বুরহান দিবস' পালনের কথা ঘোষণা করেছে।

সম্প্রতি কাশ্মীরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।  এ দিনের ঘটনার পরে জরুরি বৈঠক করেন রাজ্যপাল এন এন ভোরা। সেনার সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের সামঞ্জস্য বজায় রাখার উপরে জোর দেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামিকালও শ্রীনগরের শহরতলি এলাকা ও দক্ষিণ কাশ্মীরের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে।