অল্পবয়সে বিয়ে ভাল না দেরিতে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা


কলকাতা: বছর ২২-এর কোঠা ছুঁলেই পাত্র খোঁজা শুরু । ভারতীয় মেয়েদের ক্ষেত্রে এমনটাই হয়ে এসেছে বহুযুগ ধরে । মহিলারা আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই । অল্পবয়সে বিয়ের বদলে এথন ২৮-৩২কেই বিয়ের বয়স হিসেবে বেছে নিচ্ছেন মেয়েরা । কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৩৫ পেরিয়েও বিয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কেউ কেউ । কোন বয়সে বিয়ে করা ভাল তা নিয়ে তর্ক-বিতর্কও রয়েছে অনেক । বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অল্পবয়সে বিয়ের যেমন রয়েছে সুবিধা-অসুবিধা, তেমনই বেশি বয়সে বিয়েরও রয়েছে সুবিধা-অসুবিধা দুটোই ।

২০-৩০
এই সময় কলেজের পাঠ শেষ করে আমরা কেরিয়ার শুরু করি । কিন্তু কেরিয়ারে পায়ের তলার জমি তখনও শক্ত হয় না । এই সময় হয়তো আমরা বিয়ের জন্য হাইস্কুল বা কলেজের প্রেমিক বা প্রেমিকাকেই বেছে নিই ।

সুবিধা: দুজনেরই বয়স কম থাকে । বিয়ের সফর জুড়ে থাকে একসঙ্গে শেখা, একসঙ্গে পরিণত হওয়া । অল্পবয়সে সন্তান এলে তাড়াতাড়ি বড় করতে যেমন সুবিধা, তেমনই একাধিক সন্তানের পরিকল্পনা করা যায় । নিজেরা চল্লিশের কোঠায় থাকতে থাকতেই বাচ্চারা বড় হয়ে গেলে জীবনের অন্য অনেক দিকে মনোনিবেশ করা যায় । নতুন অ্যাডভেঞ্চার বা অন্য কোনও কেরিয়ার বেছে নেওয়া যায় ।

অসুবিধা: কম বয়সে আমরা নিজেদের চিনতে পারি না, বুঝতে পারি না । নিজেদের বিশ্বাস, পছন্দ-অপছন্দ, জীবন থেকে প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের স্পষ্ঠ ধারণা থাকে না । বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুজনের আলাদা মূল্যবোধ গড়ে উঠলে সম্পর্কে দূরত্ব আসা স্বাভাবিক ।

৩০-এর পর বিয়ে
এই সময় থেকে আমরা নিজেদের চিনতে শুরু করি । বুঝতে শুরু করি আমরা জীবনে কী চাই । নিজেদের আবিষ্কার করি । এই সময় কেরিয়ার এবং আর্থিক দিক থেকেও আমরা অনেকটাই সুস্থির অবস্থানে থাকি ।

সুবিধা: এই সময় আমরা অনেক পরিণত । ফলে নিজেদের মূল্যবোধ অনুযায়ী জীবনসঙ্গী বেছে নিতে পারি । সিঙ্গলহুড অনেকদিন এনজয় করার ফলে এই সময় বিবাহিত জীবনেও অনেক বেশি সুস্থির হতে পারি আমরা । ম্যারেজ রিসার্চ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ৩০-এর পর বিয়ে হলে মহিলাদের ডিভোর্সের চান্স থাকে মাত্র ৮ শতাংশ ।

অসুবিধা: এই সময় মহিলারা কেরিয়ারে ভাল জায়গায় থাকে । এই সময়ে বিয়ে, সন্তানধারণের জন্য কেরিয়ারে ছেদ পড়লে তা কেরিয়ারের জন্য ক্ষতিকারক । আবার ২৮ বছর বয়সের পর থেকে সন্তানধারণের ক্ষমতাও কমতে থাকে আমাদের । ৩০-৩৪-এর মধ্যে এই ধরনের সমস্যা ৮-১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায় ।

৪০ পেরিয়ে বিয়ে
কারও কারও মনের মানুষ পেতে একটু বেশিই সময় লেগে যায় । হয় করিয়ারের জন্য, নয়তো অন্য কোনও কারণে জীবনের অন্যান্য বিষয় বিয়ের থেকে বেশি গুরুত্ব পায় । ফলে বিয়ে করতে দেরি হয়ে যায় কিছুটা ।

সুবিধা: এই সময় আমরা আর্থিক ভাবে অনেকটাই স্বচ্ছল । ফলে যেভাবে খুশি, যেমন খুশি উপায়ে বিয়ে যেমন করতে পারি, তেমনই দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর বিয়ে করায় সম্পর্কের গুরুত্বও বেশি বুঝতে পারি ।

অসু্বিধা: ৪০-এর পর বিয়ে করলে মহিলাদের বন্ধ্যাত্বজনিত সমস্যা ১৫ থেকে ২৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায় । চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, ৩৫ বছর বয়সের পর স্বাভাবিক ভাবে সন্তানধারণের সম্ভাবনা মাত্র ৩৩ শতাংশ । ফলে এই সময় কৃত্রিম পদ্ধতির সাহায্য নিতে হয় । কিন্তু আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হওয়ার কারণে বিপুল খরচ সামলানো অনেকটাই সহজ হয় ।