৪১ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি, সিবিআইয়ের নজরে রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর
৪১ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি কেসে এবার সিবিআইয়ের নজরে রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর। অভিযোগ, অনৈতিক উপায়ে ব্যাংক থেকে মোটা টাকার ঋণ পেয়েছে দিল্লির নামী পর্যটন সংস্থা এয়ারওর্থ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুর প্রাইভেট লিমিটেড। এই ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কাজে যুক্ত ছিলেন রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর কেসি চক্রবর্তী। ওই পর্যটন সংস্থার নামে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে সিবিআই। তখনই জালিয়াতির সঙ্গে কেসি চক্রবর্তীর যু্ক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। ঋণ জালিয়াতির কেসে ফাঁসতে চলেছেন, কানাঘুষোয় এমন সম্ভাবনার ইঙ্গিত পেয়ে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করে ফেলেন কেসি চক্রবর্তী। চলতি বছরের মে মাসে লন্ডনে যাওয়ার সময় মুম্বই এয়ারপোর্ট থেকেই তাঁকে ফিরতে হয়। কেননা ততক্ষণে তাঁর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করেছে সিবিআই।
উল্লেখ্য, ২০০৯-২০১৪ পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর পদে ছিলেন কেসি চক্রবর্তী। সেই সময়ই তিনি সংশ্লিষ্ট পর্যটন সংস্থাকে মোটা টাকার ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। অভিযোগ, রীতিমতো ব্যাংকে জাল নথিপত্র জমা করেই ৪১ কোটি টাকার ঋণ পেয়ে যায় সংস্থাটি। এই ঘটনার কিছুদিন পরেই অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি ওই সংস্থার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আনেন। তদন্তে নামে পুলিশ। জানা যায়, বিভিন্ন জাল নথি দেখিয়েই ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাংক থেকে ঋণ পেয়েছে সংস্থাটি। গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে কেসি চক্রবর্তীর যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। এরপরই গত ডিসেম্বরে তাঁকে প্রথম ডেকে পাঠায় সিবিআই। তবে প্রায় চারমাস পরে অর্থাৎ এপ্রিলে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দেন তিনি। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই গত মে মাসে রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নরের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করে সিবিআই।
এদিকে সংশ্লিষ্ট পর্যটন সংস্থার ডিরেক্টর গৌরব ও সোনালি মেহরার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, জালিয়াতি এবং নকল নথিপত্র তৈরির অভিযোগ রয়েছে। ঋণ নেওয়ার সময় ব্যাংকে নকল নথি জমা করার অভিযোগও রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এসবের কারণেই সিবিআইয়ের নজরদারীতে পড়েছেন রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর। তাঁর ব্যাংক ব্যালান্সও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যেই নিজেকে নির্দোষ হিসেবে দাবি করেছেন কেসি চক্রবর্তী। এবং তাঁর বিরুদ্ধে জারি হওয়া লুকআউট নোটিস প্রত্যাহারেরও আরজি জানিয়েছেন।