বায়না শোনেনি বাবা-মা, অভিমানে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী শিশু


মহিষাদল সঙ্গে যেতে চেয়েও পারেনি। অভিমানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল বছর আটেকের শিশুপুত্র। তার নাম শুভঙ্কর মাইতি। বাথরুমে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় চতুর্থ শ্রেণির এই পড়ুয়া। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মহিষাদলের নৈ-গোপালপুরে।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভঙ্করের মা অসুস্থ। তাই ডাক্তার দেখাতে মাকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছেন বাবা। কলকাতায় যাচ্ছে শুনে মায়ের সঙ্গে যাওয়ার বায়নাও করছিল শুভঙ্কর। বাড়ির বড়রা তাতে খুব একটা আমল দেননি। একান্নবর্তী পরিবারে লোকজনের অভাব নেই। কাকা কাকিমাদের পাশাপাশি খুড়তুতো ভাইবোনেরাও ছিল। বাবা-মা ভেবেছিলেন হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর জন্য ছোটাছুটি চলবে সারাদিন। গরমে বাচ্চা আরও কাহিল হয়ে পড়বে। তাই বাড়িতেই রেখে যান ছেলেকে। শুভঙ্করের দিদিও রয়েছে। সে প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়তে যেতেই স্কুলে যাওয়ার জন্য শুভঙ্করকে স্নানে যেতে বলেন কাকিমা। কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকার পর স্নানে চলে যায় সে। কাকিমা ভেবেছিলেন ছেলের রাগ পড়েছে। অন্য বাচ্চাদের খাইয়ে স্কুলে পাঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এরমধ্যে অনেকটা সময় কেটেছে শুভঙ্করের দেখা নেই। এদিকে স্কুলে যেতে হবে তাই পড়ে ফিরে এসেছে দিদি। স্নান করতে গিয়ে দেখে বাথরুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বেশ কয়েকবার ধাক্কা দিয়েও লাভ হয়নি। তখন ওই নাবালিকা কাকিমাকে ডাকাডাকি শুরু করে। চিন্তিত কাকিমা বাথরুমের দরজা ধরে জোরে ধাক্কা দিতেই ভিতরের ছিটকিনি পড়ে যায়। দেখতে পান গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে বাথরুমের চালে ঝুলছে শুভঙ্কর। ঘটনার আকস্বিকতায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ছোট্টো দিদি। তড়িঘড়ি শিশুটিকে উদ্ধার করে মহিষাদল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এদিকে এহেন দুর্ঘটনার পরেই খবর যায় স্থানীয় থানায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বাবা মা বায়না শোনেনি, এই অভিমানেই আত্মঘাতী হয়েছে খুদে। কলকাতায় যেতে না পেরে শুভঙ্কর যে আত্মঘাতী হতে পারে ভাবতেই পারছেন না বাড়ির সদস্যরা। গোটা ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।