'বারবার তিন তালাক স্বামীর, নিকাহ হালালার অছিলায় লাগাতার ধর্ষণ করেছে শ্বশুর'


যত দিন যাচ্ছে, মহিলাদের উপর অত্যাচারের নতুন নতুন কায়দা একে একে সামনে আসছে। এ বারের ঘটনা উত্তরপ্রদেশের। সেখানে এক মহিলাকে বারবার তিন তালাক দিতেন তাঁর স্বামী। আবার তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়ার অছিলায় শ্বশুরের সঙ্গে নিকাহ হালালা করান। মুসলিম এই প্রথার দোহাই দিয়ে ওই অসহায় মহিলাকে শ্বশুর বহুবার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। 

মহিলাটির অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে ও তাঁর স্বামী ও পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে অন্য ধারায় FIR দায়ের করা হয়েছে। ওই মহিলা জানিয়েছেন, '২০০৯ সালের জুলাই মাসে আমার বিয়ে হয়। স্বামী পেশায় গাড়ির চালক। প্রেমনগর থানার অন্তর্গত সুরখা রাজা চক মহল্লায় আমরা থাকি। আমার সন্তান হয়নি বলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার উপর অত্যাচার শুরু করেন। ২০১১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পরিবারের সবার সামনে স্বামী আমায় তাত্‍‌ক্ষণিক তিন তালাক দেন। আমার বাবা মারা গিয়েছেন। মা দাদাদের সঙ্গে থাকেন। আমি জিজ্ঞেস করি কোথায় যাব? এরপর আমার স্বামী ও তাঁর পরিবার আমায় বলেন, শ্বশুরের সঙ্গে নিকাহ হালালা করতে। আমি রাজি হইনি বলে আমাকে মারধর করা হয়। খেতে দেওয়া হত না। ওরা আমায় মাদক ইঞ্জেকশনও দিতে শুরু করে। ২০১১ সালে ১ জুলাই ওরা জোর করে আমায় শ্বশুরের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয়। আর শ্বশুর আমায় বহুবার ধর্ষণ করার পর ১০ দিন বাদে তিন তালাক দেন।'

তিনি আরও জানান, '২০১১ সালের নভেম্বরে ফের স্বামীর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। তবে শ্বশুর আমার উপর ধর্ষণ চালিয়ে যেতে থাকেন। তার উপর ছিল স্বামীর মারধর। এই অবস্থাই চলতে থাকে ৬ বছর ধরে। ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি আমার স্বামী ফের তিন তালাক দেন।' ২০১৭ সালে তিনি আদালতে অভিযোগ দায়ের করলেও সামাজিক হেনস্থার ভয়ে তাঁর ধর্ষিতা হওয়ার ঘটনা পুলিশকে জানাননি। এরপর তাঁকে দেওরের সঙ্গে নিকাহা হালালার জন্য জোর দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তবে তাতে তিনি রাজি হননি।

মহিলাটি জানিয়েছেন, 'আমার ছোট বোন আর ১৪ বছরের মেয়েকে নিয়ে গরবি চোকিতে থাকি। দ্বিতীয়বার তিন তালাক দেওয়ার পর আমার উপর চরম অত্যাচার করা হত। মারধর করা হত। অভুক্ত রেখে একটা ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। আমার মা আর বোন আমায় উদ্ধার করেন। দ্বিতীয়বার আমার স্বামী তার ভাইয়ের সঙ্গে নিকাহ হালালার জন্য খুব চাপ দিয়েছিল। প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছিল। তবে এ বার আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। ঠিক করে নিয়েছিলাম যে ওঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করব। বিচার চাইব।' 

কিলা পুলিশ স্টেশনের অফিসার কেকে ভার্মা জানিয়েছেন, 'মহিলাটির স্বামী, তাঁর বাবা-মা, বোন ও তিন ভাই-সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'