কাঁধে করে বাবার শবদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া ‘অপরাধ’, একঘরে চার কন্যা


ছেলে নেই৷ রাজস্থানের বুন্দি জেলার রাগের কলোনির বাসিন্দা দুর্গাশংকরের অবলম্বন বলতে ছিলেন চার মেয়ে৷ দীর্ঘদিন ধরেই অসুখে ভুগছিলেন তিনি৷ শনিবার রাতে মারা যান বছর আটান্নর দুর্গাশংকর৷ অপুত্রক ওই ব্যক্তির ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর চার মেয়ের কাঁধে করেই শ্মশানে যাবেন তিনি৷ মারা যাওয়ার পরেও বাবার শেষ ইচ্ছা ভুলতে পারেননি তাঁর চার মেয়ে৷ রবিবার বিকেলে বাবাকে কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে যান তাঁরা৷ কিন্তু শেষকৃত্য মিটতে না মিটতেই বিপাকে পড়েছেন দুর্গাশংকরের মেয়েরা৷ বাবার 'ইচ্ছাপূরণ'-এর অপরাধে এই পরিবারটিকে একঘরে করে দেওয়ার নিদান দেয় খাপ পঞ্চায়েত৷ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন৷

দুর্গাশংকরের বড় মেয়ে মিনা বলেন, ''বাবা মারা যাওয়ার পর তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা জানতে পারেন খাপ পঞ্চায়েতের সদস্যরা৷ বাবার ইচ্ছাপূরণে বাধা দেওয়া হয়৷ কিন্তু সেকথা না শুনেই আমরা বাবাকে কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে যাই৷ শেষকৃত্য সেরে ফিরে দেখি কমিউনিটির স্নানাগার তালাবন্ধ৷ কেউই ওই স্নানাগারের চাবি দেয়নি আমাদের৷ এই সময়ে কেউই বাড়িতে রান্না করেন না৷ কিন্তু প্রতিবেশীরা কেউই খাবার পাঠায়নি আমাদের৷ খাপ পঞ্চায়েতের সদস্যদের কাছে  বিধবা মা ক্ষমাও চেয়েছেন, তাতেও মন গলেনি কারও৷'' দিদির সঙ্গে একই সুরে সুর মেলান তাঁর বোন কলাবতী৷ তিনি বলেন, ''বাবার শেষ ইচ্ছাপূরণের আমাদের দোষী প্রমাণিত করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে৷  

বুন্দি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মদু লাল দাবি করেন, বাবার শেষ ইচ্ছাপূরণে চার কন্যার এই কাজের জন্য খাপ পঞ্চায়েতের সদস্যদের কাছে তিনিও ক্ষমা চেয়ে নেয়৷ কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি৷ চার মেয়ের পাশাপাশি দুর্গাশংকরের শেষকৃত্যে মাত্র কয়েকজন আত্মীয় অংশ নেন বলেই জানান স্থানীয় বাসিন্দা তিকাম চন্দ৷

যদিও চার কন্যার তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কমিউনিটি প্রধান চন্দদুলাল চান্ডেলিয়া৷ এই ঘটনার সময় শহরে ছিলেন না বলেই দাবি তাঁর৷ চার কন্যার এই কাজ যথেষ্ট প্রশংসনীয় বলেও দাবি তাঁর৷

Highlights

বাবাকে কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে গেলেন চার মেয়ে৷

শেষকৃত্য সেরে আসার পর থেকেই একঘরে রাজস্থানের রাগের কলোনির বাসিন্দা ওই পিতৃহারারা৷

যদিও কমিউনিটি প্রধান চার কন্যার অভিযোগ মানতে নারাজ৷