বিয়ের কেনাকাটা করতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যু হবু বরের


রবিবার বাগদান হওয়ার কথা ছিল। আগের দিন এসপ্লানেডে কেনাকাটা সারতে এসেছিলেন যুগলে। ময়দানে আচমকা বাজ পড়ে মৃত্যু হল অজয় মল্লিকের (২৫)। গুরুতর আহত অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি বাগদত্তা মনীষা মল্লিক। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টা নাগাদ মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব লাগোয়া সেনোটাফের চাতালে ঘটনাটি ঘটেছে।

পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টা নাগাদ ময়দান এলাকায় বাজ পড়ে। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ দেখেন, সেই বাজের ঝলকানিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন এক যুগল। তাঁর কাছ থেকে খবর পেয়ে বাকি পুলিশকর্মীরা এসে ট্যাক্সিতে চাপিয়ে দু'জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকেরা অজয়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রথমে অচেতন ছিলেন মনীষা। পরে তিনিই অজয়ের নাম পুলিশকে জানান। পরে নিজের পরিজনদের হদিসও দেন। অজয়ের বাড়ি কড়েয়া থানা এলাকার লোহাপুলের কাছে। মনীষার বাড়ি ধাপা এলাকায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, মনীষার এক মেসো এসএসকেএম হাসপাতালে চাকরি করেন। তিনি সপরিবারে হাসপাতালের ভিতরেই থাকেন। প্রথমে তাঁরা আসেন এবং পরে মনীষার মাকে খবর দেওয়া হয়। মনীষার পরিজনদের কাছ থেকে নম্বর দিয়ে খবর দেওয়া হয় অজয়ের বাবা বিনোদ মল্লিককে।

হাসপাতালে দাঁড়িয়ে মনীষার পরিজনেরা এ দিন জানান, বছরখানেক আগে দু'জনের বিয়ের পাকা কথাও হয়েছে। অজয় শহরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, প্রবল বৃষ্টির সময় ময়দানে গাছের তলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। বৃষ্টি একটু কমতেই সেনোটাফের কাছে এসে বসেন। সে সময়ই ঘটনা ঘটেছে।

পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, এ বছর বাজ পড়ার ঘটনা অনেক বেশি। জেলায় তো মৃত্যু ঘটেইছে, গত ১০ জুন কলকাতার বিবেকানন্দ পার্কে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছিল দেবব্রত পাল নামে এক তরুণ ক্রিকেটারের। বজ্রপাত কেন বাড়ছে তা অবশ্য নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আবহবিজ্ঞানীরা। কিন্তু অনেকের মতে, এর সঙ্গে দূষণের সম্পর্ক থাকতে পারে। আবহবিজ্ঞানী সুতপা চৌধুরীর মতে, ''কলকাতার বাতাসে দূষিত কণা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বজ্রপাতও বাড়ছে, এটা গবেষণায় দেখা গিয়েছে।'' আবহবিজ্ঞানীদের কেউ কেউ আবার বলছেন,  উঁচু গাছ কমে যাওয়ায় বজ্রপাতে মৃত্যু বাড়ছে। কারণ, নারকেল, তালের মতো বড় গাছ থাকলে তারাই বাজকে মাটিতে পড়ার থেকে আটকে দেয়।