চেয়েও মেলেনি শববাহী যান, মোটরবাইকে মায়ের মৃতদেহ মর্গে নিয়ে গেলেন ছেলে

অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করার মতো টাকা ছিল না৷ হাসপাতাল থেকেও সাহায্য পাননি৷ তাই বাধ্য হয়ে কাঁধে করে স্ত্রীর নিথর দেহ নিয়ে ৬০কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন ওড়িশার দানা মাঝি৷ এবারও প্রায় একই ঘটনার সাক্ষী মধ্যপ্রদেশ৷ মায়ের দেহ ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য শববাহী যান পেলেন না ছেলে৷ তাই বাইকে করে মায়ের নিথর দেহ ময়নাতদন্তে নিয়ে গেলেন তিনি৷

মধ্যপ্রদেশের টিকমগড় জেলার প্রত্যন্ত মাস্তাপুর গ্রামের এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে হইচই৷  ওই গ্রামের বাসিন্দা কুনওয়ার বিবি৷ গত রবিবার  বাড়িতেই ছিলেন তিনি৷ কাজ করার সময় কুনওয়ারা লক্ষ্য করেননি বাড়িতেই তাঁর আশপাশে ওঁত পেতে রয়েছে বিপদ৷ কাজের মাঝে আচমকাই যন্ত্রণায় ছটফট করে ওঠেন ওই মহিলা৷ কী হল বোঝার আগেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি৷ অবাক হয়ে যান পরিজনেরা৷ আচমকা কুনওয়ারার অসুস্থতার খবর কানে যেতেই বাড়ির সামনে ভিড় জমান প্রতিবেশীরা৷ কিছুক্ষণ পরেই প্রত্যেকে বুঝতে পারেন কুনওয়ারাকে সাপে কামড়েছে৷ একটু সময়ও অপেক্ষা না করেই মোহনগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে  নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে৷ কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি৷  সাপের ছোবলে প্রাণ হারান কুনওয়ারা৷

হাসপাতাল থেকে মর্গের দূরত্ব প্রায় ৩৫কিলোমিটার৷ সেখানেই মহিলার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ৷  কিন্তু দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন শববাহী যানের৷ কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও শববাহী যানের বন্দোবস্ত করা হয়নি৷ তাই বাধ্য হয়ে মায়ের দেহ বাইকের সঙ্গে বেঁধে মর্গে নিয়ে যান রাজেশ৷ মাতৃহারা রাকেশকে সাহায্য করেন তাঁরই এক খুড়তুতো ভাই৷ এরপর মর্গে মায়ের দেহের ময়নাতদন্ত করান রাজেশ৷ এরপর মায়ের দেহ নিয়ে গ্রামে ফেরেন তিনি৷

এই ঘটনার পরই আবারও মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর বন্দোবস্ত কেন ওই মহিলার পরিবারকে করতে হল, এই প্রশ্নের মুখোমুখি হন জেলা প্রশাসনিক কর্তারা৷  টিকামগড়ের কালেক্টরেট বলেন, ''মন্দিরে নিয়ে গেলে হয় তো মা বেঁচে যাবে, এই আশাতেই রাজেশ তাঁর মাকে নিয়ে মন্দিরে গিয়েছিল৷ এরপর জেলা হাসপাতালেও নিয়ে গিয়েছিল সে৷ কিন্তু  মা প্রাণ ফিরে না পাওয়ায় রাজেশ দেহ মর্গে নিয়ে গিয়েছিলেন৷'' তিনি আরও বলেন,''গ্রামে দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শবযানের বন্দোবস্ত করেছিল৷''