শৈশবেই অপরাধে হাত পাকানো, নদিয়ায় ‘কঙ্কাল কারিগর’-এর গ্রেপ্তারিতে খুলছে জট


কৃষ্ণনগর : কঙ্কাল কাণ্ডে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তের উঠে এল 'কঙ্কাল কারিগর'দের কীর্তি। তদন্তের জট কিছুটা আলগা হয় দুই কঙ্কাল কারিগরের গ্রেপ্তারিতে। ছোটবেলা থেকেই নাকি চলে ট্রেনিং। মৃতদেহের মাংস গলিয়ে নিখুঁতভাবে কঙ্কাল তৈরি করার কাজ সেখানো হয় ওস্তাদ কারিগরের ডেরায়।

সদ্য নদিয়ার নবদ্বীপে ভাগীরথীর নির্জন চর থেকে উদ্ধার কঙ্কাল ও মাথার খুলি। ঘটনায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পুলিশি তদন্তে জালে পড়ে কার্তিক ঘোষ (৫২) ও তাপস পাল (৩০)। অভিযোগ, দু'জনেই কঙ্কাল কারিগর। বয়স কম হলেও এই কাজে উস্তাদ তাপস। তার কাছেই হাতেখড়ি কার্তিকের। অভাবের টানেই এই কাজে নাম কার্তিক। পুলিশ সূত্রে খবর, কঙ্কাল-কান্ডের বড় চাঁই পুর্বস্থলী থানার মুক্তি বিশ্বাসের হয়ে কাজ করত তাপস। তারপর নিজেই ব্যবসার হাল ধরে সে। অন্যদিকে, কার্তিক ঘোষ ভাগীরথী নদী পেরিয়ে নবদ্বীপে এসে বেলপাতা জোগান দেওয়ার ব্যবসা করত। পরিচিতদের মতে ধার্মিক প্রকৃতির মানুষ কার্তিক। মাঝে জ্যোতিষী হয়ে হাত দেখা শুরু করে কার্তিক। তাতেও সংসার চলছিল না। তখনই তার সঙ্গে দেখা হয় তাপসের। টাকার লোভ দেখিয়ে কার্তিককে ফাঁদে ফেলে সে। পেটের বালাই বড়। তাই হয়তো এই ব্যবসায় নামে সে।

তদন্তে জানা গিয়েছে. বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে বিক্রি করা হত ওই কঙ্কাল। রাতের কঙ্কাল তৈরির কাজ সেরে, প্যাকেটবন্দি কঙ্কাল বিক্রির উদ্দেশ্যে কলকাতায় পাচার করা হতো। নবদ্বীপ থানার পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছে, বিভিন্ন কেমিক্যালের মাধ্যমে, আবার কিছুটা আগুনে পুড়িয়ে মৃতদেহের মাংস ছাড়িয়ে কঙ্কাল বের করা হত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাথার খুলি, পাঁজর, হাত, পা আলাদা করে তারা নিয়ে যেত বিক্রির জন্য। এতদিন মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ওইভাবেই তারা বিক্রি করে এসেছে। পড়ে সেগুলি জোড়া লাগানোর কাজ করত মেডিক্যাল কলেজগুলি। ধৃতদের কাছে থেকে তিনটে মানুষের মাথার খুলি, ৩৮টি পাঁজরের হাড়, ৬টি হিটবোন , ৪টি শিরদাঁড়া, ৪টি সোলডার বোন পাওয়া গিয়েছে।