কর্মসংস্থান কত হল, হিসেব মেলাতে গিয়ে হোঁচট খেলেন মোদী


লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বছরে ২ কোটি মানুষের রোজগারের সুযোগ করে দেবেন। চার বছর পেরিয়ে গেলেও সেই হিসেব মেলাতে পারলেন না নরেন্দ্র মোদী। কর্মসংস্থানের সঠিক সংখ্যা দিতে গিয়ে হাতড়াতে হল তাঁকে। শেষ পর্যন্ত কবুল করে নিলেন, এ নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ অসত্য নয়।

গত শনিবারই একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যা এখন ধাপে ধাপে প্রকাশিত হচ্ছে। দেশের আর্থিক পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে মোদী এখানে দুষেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে। অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে 'ল্যান্ডমাইন' বিছিয়ে যাওয়ার জন্য 'অর্থনীতিবিদ' মনমোহন ও 'সবজান্তা' চিদম্বরমকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। মোদীর দাবি, বাজেটেও ভুল পরিসংখ্যান দিয়েছিলেন চিদম্বরম। কিন্তু 'রাষ্ট্রনীতি'কে 'রাজনীতি'র ঊর্ধ্বে ঠাঁই দেন বলেই মনমোহন জমানার আর্থিক হাল নিয়ে তিনি তরজায় নামেননি। তবে এত অভিযোগের পরেও প্রধানমন্ত্রীকে হোঁচট খেতে হয়েছে রোজগারের সুযোগ নিয়ে তাঁর নিজের প্রতিশ্রুতি পালন করার প্রশ্নে।

সাক্ষাৎকারে মোদী শুনিয়েছেন মুদ্রা যোজনায় ১২ কোটি ব্যক্তিকে ঋণ দেওয়ার কথা। তবে অনেকেরই মতে, এগুলি নতুন রোজগার না-ও হতে পারে। ইপিএফও-তে ৭০ লক্ষ চাকরি, গত এক বছরে ৪৮ লক্ষ নতুন সংস্থার নথিভুক্তিকরণের কথাও বলেছেন তিনি। যেগুলিও নতুন কাজের সূচক নয়। এ সব হিসেব দিয়েই প্রধানমন্ত্রী চলে গিয়েছেন আন্দাজে। তাঁর দাবি, ''এক কোটি বাড়ি হয়েছে, দ্বিগুণ রাস্তা হয়েছে, পরিকাঠামো হচ্ছে, রোজগার নিশ্চয়ই বেড়েছে।'' কিন্তু বছরে নতুন রোজগার কত দিয়েছেন, তার হিসেব দিতে পারেননি তিনি। 

মোদী অবশ্য বলেন, ''দেশের ৮০ শতাংশ রোজগারই অসংগঠিত ক্ষেত্রে। আসল সমস্যা রোজগারের সুযোগ নিয়ে নয়, বরং এর হিসেবের। কারও কাছেই সঠিক হিসেব নেই। তাই বিরোধীরা এই সুযোগ নেবে, স্বাভাবিক। বিরোধীদের আমি দোষ দিই না।'' জিএসটির বর্ষপূর্তির দিনে চিদম্বরম মন্তব্য করেছিলেন, ''জিএসটি ও নোটবন্দি নিয়ে মোদীর সিদ্ধান্তে এক কোটি মানুষ রোজগার খুইয়েছেন।'' সেই অভিযোগ খারিজ করে মোদী পশ্চিমবঙ্গ ও কর্নাটক সরকারের দেওয়া কর্মসংস্থানের নতুন হিসেব তুলে ধরেন। যুক্তি দেন, রাজ্য যদি রোজগার দেয়, কেন্দ্র নয় কেন?