বড়াই ছেড়ে কিছু করে দেখান, মোদীকে খোঁচা মনমোহনের


শুধুই আত্মপ্রচার, নিজের প্রশংসা আর অহঙ্কার করলে কিছুই হবে না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মোদী সরকার স্পষ্ট নীতি ঘোষণা করুক। তা কী ভাবে কার্যকর হবে, তা জানাক।

এই ভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কড়া সমালোচনা করলেন পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। আগামী বছর লোকসভা ভোটে লড়ার জন্য কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকে পূর্ণ সমর্থনেরও আশ্বাস দিলেন।

রবিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (সিডব্লিউসি)-র বৈঠকে মনমোহন দেশের সামাজিক সংহতি নষ্ট করা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি স্তিমিত হয়ে পড়ার দায় চাপিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী ও তাঁর সরকারের ঘাড়ে। আর তার হাত থেকে দেশের মানুষকে রেহাই দেওয়ার জন্য কংগ্রেসে রাহুলের হাত শক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ডিসেম্বরে দলের সভাপতি হওয়ার পর নতুন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এ দিন সভাপতিত্ব করেন রাহুল। লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ার পরেও যে কংগ্রেস মনোবল হারায়নি, এ দিন তা স্পষ্ট হয়ে যায় মনমোহনের বক্তব্যে। গত দু'মাস ধরেই মোদীর সঙ্গে চাপানউতোর চলছে মনমোহনের। পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী এ দিন বলেন, ''প্রধানমন্ত্রী মোদী আত্ম-প্রশংসা ও অহঙ্কারের যে সংস্কৃতি চালু করেছেন, তা আমি কিছুতেই মানতে পারি না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উনি স্পষ্ট নীতি ঘোষণা করুন।''

এ মাসের গোড়ায় মনমোহন জমানার কড়া সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বলেছিলেন, ''অর্থনীতিবিদ প্রধানমন্ত্রী ও সবজান্তা অর্থমন্ত্রী (পড়ুন, মনমোহন সিংহ)-র জন্য দেশের অর্থনীতি যে অবিশ্বাস্য ভাবে বেহাল হয়েছিল, তার থেকে আমার সরকারকেই উদ্ধার করতে হয়েছে।''

মনমোহন এ দিন তার জবাব দিতে গিয়ে মোদী সরকারের 'ভুল নীতি প্রণয়ন' ও 'অর্থনৈতিক অব্যবস্থা'র কড়া সমালোচনা করেন। তাঁর বক্তব্য, এর ফলে গোটা দেশ অবশ্যম্ভাবী সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছে। ব্যাঙ্ক প্রতারণার একের পর এক ঘটনা নিয়েও মোদীকে বেঁধেন পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী। আর ৪ বছরের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার যে অঙ্গীকার করেছে মোদী সরকার, সে সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করে মনমোহন বলেছেন, ''সেটা করতে হলে দেশের কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ১৪ শতাংশে পৌঁছতে হবে। যা আদৌ সম্ভব নয়। তাই প্রধানমন্ত্রী মোদীর ওই আশ্বাসকে 'শূন্যগর্ভ' বলতেও এ দিন দ্বিধা করেননি মনমোহন।

তাঁর আগে রাহুল বলেন, ''কংগ্রেসই দেশের কণ্ঠ। বিজেপি যে ভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, দলিত, উপজাতি, সংখ্যালঘু ও গরিব মানুষদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে, তার হাত থেকে মানুষকে বাঁচানোর দায়িত্ব কংগ্রেসেরই।''