দার্জিলিঙেও ২৮ ডিগ্রি !


আচমকা প্রবল দাবদাহ শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলে। বুধবার গরম পড়েছে দার্জিলিংয়েও। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, দার্জিলিঙের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ধরে দার্জিলিঙের বাসিন্দা চন্দ্রনাথ দাস জানান, গত এক দশকের মধ্যে জুলাই মাসে দার্জিলিঙে এমন গরম পড়তে দেখেননি। লাকপা শেরপা, পবন গুরুংয়ের মতো প্রবীণ বাসিন্দারাও বলেছেন, ''গত বছর জুলাইয়ে দার্জিলিঙে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছিল। এ বার প্রকৃতি উষ্ণ। এ বার তো ঘরে ঘরে ফ্যান লাগাতে হবে দেখছি।'' ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন পাহাড়ের নানা এলাকায় আইসক্রিমের বাড়তি চাহিদা দেখা গিয়েছে।

দাবদাহ অসহ্য সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। শিলিগুড়িতে তাপমাত্রার পারদ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে চলে গিয়েছিল এ দিন। জলপাইগুড়ি, কোচবিহারেও প্রবল গরম অনুভূত হয়েছে। দুপুরের দিকে শিলিগুড়িতে রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়। বিকেলের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরম বাতাস বয়েছে কিছুক্ষণ।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক রঞ্জন রায় জানান, উত্তরবঙ্গের আকাশে মৌসুমী বায়ু একেবারেই দুর্বল হয়ে পড়েছে। যতটুকু নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে তাও ঘনীভূত হচ্ছে অন্যত্র। তিনি বলেন, ''জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে চতুর্থ সপ্তাহের মধ্যে উত্তরবঙ্গে দাবদাহের ইতিহাস রয়েছে। তবে সব ঠিক চললে এক সপ্তাহের মধ্যেই ফের বর্ষার উপস্থিতি টের পাওয়া যাবে।'' তা হল, এমন দাবদাহ আরও ৪-৫ দিন চললেও মাঝে মধ্যে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা ফুরিয়ে যায়নি।

পাশের রাজ্য সিকিমেও তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। এদিন গ্যাংটকের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে। শহর ও লাগোয়া এলাকায় বৃষ্টি হয়নি। রাতের দিকে অবশ্য আবহাওয়া মনোরম হয়ে ওঠে পাহাড়ে। দার্জিলিঙের ব্যবসায়ীরা কয়েকজন জানান, চলতি মরসুমে এখনও পাহাড়ের এটি উষ্ণতম দিন।

চিকিৎসক প্রেম দোরজি ভুটিয়া বলেন, ''আগে কোনও দিন পাহাড়ে জুলাই মাসে এতটা গরমের কথা শুনিনি। শিলিগুড়িতেও দিনে গরম হলেও রাতে বৃষ্টি হত। এখন নানা কারণে সবটাই পাল্টে যাচ্ছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। আবহাওয়ার হেরফেরে নানা জীবাণু অতি সক্রিয় হয়। সে জন্য যথেচ্ছ জল, আইসক্রিম, ঠান্ডা পানীয় খাওয়া চলবে না।''