অনলাইন শপিংয়ে নয়া ফাঁদ, গায়েব হচ্ছে লক্ষাধিক টাকা


লটারি জেতার প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতে পারে প্রতারকেরা! সম্প্রতি লটারির প্রলোভনে পা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা সুস্মিতা সিংহ।


অনলাইন শপিংয়ের ক্রেতারা সাবধান! তাঁদের জন্য নতুন ফাঁদ! লটারি জেতার প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতে পারে প্রতারকেরা!

সম্প্রতি লটারির প্রলোভনে পা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা সুস্মিতা সিংহ। তাঁর কাছ থেকে তিন লক্ষ ৬১ হাজার টাকা নিয়েছিল একটি প্রতারণা চক্র। লালবাজারের গোয়েন্দারা অবশ্য এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করে দিয়েছেন। ধরা পড়েছে প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডা। তবে তার সহযোগীরা ধরা পড়েনি।

পুলিশ জানিয়েছে, সুস্মিতা অনলাইনে একটি ই-বিপণন সংস্থার মাধ্যমে সেলাই মেশিন কিনেছিলেন। দু'দিনের মাথায় তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। ওই ফোনে দাবি করা হয়, যে ই-বিপণন সংস্থা থেকে সুস্মিতা মেশিন কিনেছিলেন, সেখান থেকে ফোন করা হচ্ছে। যে ব্যক্তি ফোন করেছিল সে জানায়, ওই কেনাকাটার জন্য লাকি ড্র'য়ে সুস্মিতা সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা জিতেছেন। কবে মেশিন কিনেছেন, কত টাকায় কিনেছেন, কোন ব্যাঙ্কের কার্ড ব্যবহার করে কিনেছেন— সে সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যও সুস্মিতাকে জানানো হয়েছিল। ফলে সুস্মিতার ভেবেছিলেন, সত্যিই ওই ব্যক্তি ই-বিপণন সংস্থাটির লোক।

এরপর সুস্মিতাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, তিনি যদি টাকা নিতে চান, তাহলে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে তাঁকে বলা হয়, ওই অ্যাকাউন্টে টাকা দিতে। সুস্মিতা টাকা জমা দিলে ই-বিপণন সংস্থার নাম করে তাঁর কাছে একটি এসএমএস'ও পৌঁছেছিল। এরপর প্রতারক একে একে তাঁকে প্রসেসিং চার্জ, সিকিওরিটি ডিপোজিট, ডেলিভারি চার্জের নামে ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ৯০০ টাকা জমা করায়।

কিন্তু লটারি-জেতার টাকা কবে পাবেন তার নিশ্চয়তা না পেয়ে সুস্মিতা সরাসরি ওই ই-বিপণন সংস্থায় যোগাযোগ করেন। ওই সংস্থা জানায়, তাঁরা ওই ধরনের কোনও ফোন করেনি। প্রতারিত হয়েছেন বুঝে লালবাজারের দ্বারস্থ হন সুস্মিতা। বেনিয়াপুকুর থানায় মামলা দায়ের করে গোয়েন্দারা প্রতারকদের ব্যাঙ্ক লেনদেন বন্ধ করে ১ লক্ষ ৮০ হাজার উদ্ধার করেন।

তদন্তে নেমে বিহারের ওয়ারসলিগঞ্জের সন্তোষ কুমার নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে জেরায় জানিয়েছে, তাকে পটনার এক এজেন্ট ওই ই-বিপণন সংস্থার জনা চল্লিশ ক্রেতার কেনাকাটার তথ্য সরবরাহ করেছিল। ওই এজেন্ট তা পেয়েছেন, বিপণন সংস্থার এক কর্মীর কাছ থেকে। যদিও পুলিশের কাছে ই-বিপণন সংস্থাটির দাবি, তাদের সংস্থার অফিস থেকে কোনওভাবেই ওই তথ্য বেরনোর সম্ভাবনা নেই।