‘বুড়ো’দের ছেঁটে ফেললেন রাহুল, কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে নবীন মুখের সারি


সব ঠিক থাকলে নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে লোকসভা ভোট হতে পারে। অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিম — এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট সে সময়েই হবে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার বিধানসভা ভোটও ওই সময়েই হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে। ওই তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা ২০১৯-এর ডিসেম্বরে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার তা এগিয়ে লোকসভার সঙ্গেই করাতে চাইছে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং মিজোরাম বিধানসভার ভোট অবশ্য নির্ধারিত সময়ে, অর্থাৎ এ বছর ডিসেম্বরেই করবে নির্বাচন কমিশন।    

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ওমপ্রকাশ রাওয়ত এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, ''আমরা দেশে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত। সাংবিধানিক ভাবে লোকসভা নির্বাচন সেরে ফেলতে হবে আগামী ৩১ মে-র মধ্যে। কিন্তু কবে কোন সময়ে ভোট হবে, তা কেন্দ্রীয় সরকার জানাবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও তাদের মতামত দেবে।'' 

চলতি বছর ৩১ ডিসেম্বর অবসর নেবেন রাওয়ত। ১ জানুয়ারি থেকে দায়িত্ব নেবেন নতুন নির্বাচন কমিশনার। তাঁর হাতেই হবে দেশের পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন। তবে এ প্রসঙ্গে না ঢুকে রাওয়ত বলেন, ''আমরা রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গেও ভোট নিয়ে কথা বলি। কারণ, ভোট উপলক্ষে দেশ জুড়ে আধা সামরিক বাহিনীর প্রায় তিন লাখ জওয়ানকে নানা জায়গায় মোতায়েন করতে হবে। কেন্দ্র-রাজ্য এক সঙ্গে ভোট হবে কি না, সেটা রাজনৈতিক দলগুলি ঠিক করবে। কিন্তু আমি বলতে পারি, আমরা এখনই  তৈরি।''

বিজেপির একাংশ চাইছে, যদি রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ এবং মিজোরামের বিধানসভা ভোট পিছিয়ে মার্চ মাসে লোকসভার সঙ্গে করা যায়। কিন্তু সেটা করতে গেলে ওই রাজ্যগুলিতে কয়েক মাসের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে হবে। সে রকম কোনও সম্ভাবনা কি আছে? এই প্রশ্নে রাওয়ত স্পষ্ট বলেন, ''সাংবিধানিক ভাবেই এটা করা যায় না। আমাদের সংবিধানে স্পষ্ট লেখা আছে, কী কী কারণে ৩৫৬ ধারা জারি করা যায়।''

২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত মোট ৯ দফায় ভোট হয়। দেড় মাস আগে নির্বাচন কমিশন ভোটের দিনক্ষণ-বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিজ্ঞপ্তি জারি করলেই কেন্দ্র-রাজ্য দুই সরকারের ওপর নির্বাচন বিধি কার্যকর হয়ে যায়। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে বৈঠক হয়েছে। তাদের দিক থেকে মোদী সরকারকে জানানো হয়েছে, এক মাস এগিয়ে ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করে মার্চে ভোট শুরু করতে অসুবিধা নেই। তবে এ বার ৯ দফায় ভোট না করে ৮ দফায় করা যায় কি না, সেটা দেখা হচ্ছে।

রাওয়ত বলেন, ''আধাসামরিক বাহিনীকে বিমানে যাতায়াত করাতে বিপুল খরচ হবে। তাই এ বারও জওয়ানেরা ট্রেনেই যাতায়াত করবেন। তবে চেষ্টা হচ্ছে, যাতে তাঁদের স্থানান্তরটা কাছাকাছি রাজ্যের মধ্যে হয়।'' বিধানসভা ভোটের ক্ষেত্রে আধাসামরিক বাহিনীর খরচ বহন করতে হয় রাজ্যকে। লোকসভা ভোটের ক্ষেত্রে খরচ আধাআধি।

কমিশনের বক্তব্য, একাধিক দফায় ভোট হলে যে সব রাজ্যে একদম শেষের দিকে ভোট থাকে, তাদের আচরণবিধি মানতে হয় বেশি দিন ধরে। আবার আধাসামরিক বাহিনীকে মোতায়েন করার হিসেব কষে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করতে হয়। রাওয়তের কথায়, ''এ জন্য আমরা রাজ্যের নির্বাচনী অফিসারদের সঙ্গেও বৈঠক করছি।''