পেট খারাপ, রাজধানী দেরি করাতে বোমার ‘খবর’ দেন বেহালার যুবক


স্টেশনে যাওয়ার পথে স্ত্রীর হঠাৎ প্রচণ্ড পেট ব্যথা। আর সেই ব্যথার ওষুধ কিনতে মাঝপথে থামতে গিয়েই বিপত্তি। ট্রেন মিস হয়ে যাবে বুঝতে পেরে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে হুমকি ফোন করে বিপাকে কলকাতার বাঙালি দম্পতি।
বেহালার বাসিন্দা সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায় একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। পাণিপথে তাঁর স্ত্রী থাকেন। তাঁকে আনতেই দিল্লি গিয়েছিলেন সুপ্রিয়। শনিবার নিউ দিল্লি স্টেশন থেকে বিকেল ৪টে ৫৫ মিনিটের হাওড়া-রাজধানী এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল সুপ্রিয় এবং তাঁর স্ত্রীর।

সব কিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু নিউ দিল্লি স্টেশনে ঢোকার একটু আগেই অসহ্য পেট ব্যথা শুরু হয় সুপ্রিয়র স্ত্রীর। উপায়ন্তর না দেখে চালককে অটো ঘুরিয়ে কনট প্লেসে নিয়ে যেতে বলেন সুপ্রিয়। সেখানে ওষুধ কিনতে কিনতে ততক্ষণে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে।

আর তখনই সুপ্রিয়র মাথায় আসে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করার কথা। নিজের মোবাইল থেকেই ১০০ ডায়াল করে বলেন, হাওড়াগামী রাজধানী এক্সপ্রেসে বোমা রাখা আছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, পাঁচটা ৫টা ১৫ মিনিটে ফোনটা আসে দিল্লি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বিষয়টি রেলপুলিশকে জানান।

রেল কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে গাজিয়াবাদ স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেয়। সেখানে শুরু হয় তল্লাশি। ইতিমধ্যে তল্লাশির পাশাপাশি কে ফোন করল তাঁরও খোঁজ শুরু করে পুলিশ।

পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সুপ্রিয় যে নম্বর থেকে ফোন করেছিলেন, সেই নম্বরে ফোনও করা হয়। সুপ্রিয় নিজেই বলেন তিনি কনট প্লেসে রয়েছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে তাঁর মোবাইল ট্র্যাক করে দম্পতিকে পাকড়াও করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ে জলপ্রপাতে রাতভর আটকে শতাধিক, উদ্ধার হেলিকপ্টারে
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরার মুখে তিনি স্বীকার করেন, ট্রেন ধরার জন্যই তিনি বোমা আছে বলে ভুয়ো হুমকি দিয়ে ফোন করেছিলেন। সুপ্রিয়র পরিকল্পনা ছিল, অটো নিয়ে সোজা গাজিয়াবাদ স্টেশনে চলে যাবেন।

সব শুনে আর ওই দম্পতিকে বেশিক্ষণ আটকে রাখেনি পুলিশ। তাঁদের সতর্ক করে দিয়ে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করে পুলিশ। থানা থেকেই জামিন পেয়ে যান সুপ্রিয়। তবে যে রাজধানী ধরার জন্য এত কিছু সেই রাজধানী আর ধরতে পারেননি তাঁরা। তল্লাশির পর ৭টা ৫৫ মিনিটে রাজধানী হাওড়ার দিকে রওনা দেয়। তখনও দম্পতি থানায়।