খোলা ছাদে ঘুম ডাকাতের!


রাত জেগে হাত সাফাইয়ে হাত পাকেনি এখনও। খোলা ছাদে মিঠে হাওয়ায় বিছানা পেতেই দু'চোখ জুড়িয়ে এসেছিল। কাল হল সেই ঘুমই। সকালের আলোয় চোখ খোলার আগেই কিলচড় পড়ল পিঠে। গলায় কান্না নিয়ে নতুন ডাকাত বলে উঠল, 'খিদে পেয়েছে আমার।'

ডাকাতের কাণ্ড দেখে থ গুসকরা শহরের লাইনপাড় শিবতলা এলাকার বাসিন্দারা। যাঁর বাড়িতে ডাকাতি হওয়ার কথা ছিল সেই সঞ্জয় সাউ বললেন, ''কী ভাগ্যিস ডাকাতটা নতুন। তাই বেঁচে গেলাম।''

গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশের হাতে ওই যুবককে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম ইব্রাহিম আনসারি। বাড়ি আসানসোলের রেলপাড় এলাকায়। পুলিশের জেরায় সে দাবি করেছে, দলে আরও ৭-৮ জন রয়েছে। ডাকাতি করতেই গুসকরায় এসেছিল তারা। রবিবার সন্ধ্যায় আলু ব্যবসায়ী সঞ্জয়বাবুর বাড়িতে তাকে ঢুকে পড়তে বলে বাইরে অপেক্ষায় ছিল সঙ্গীরা। মাঝরাতে সুযোগ বুঝে ইশারা করার কথা ছিল তার। কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ায় সব গোলমাল হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে জেরা করে দলের বাকিদের খোঁজ চলছে।

সঞ্জয়বাবু জানান, বাড়ির নীচতলায় আলুর আড়ত রয়েছে তাঁর। দোতলায় মার্বেল বসানোর কাজ চলায় মা এবং স্ত্রীও নীচেই থাকছেন। তাঁর কথায়, ''রবিবার রাত সাড়ে ন'টার পরে ফিরেছি। সকালে স্ত্রী কাপড় মেলতে গিয়ে দেখে, ছাদের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। ধাক্কাধাক্কি, ডাকাডাকিতেও খোলেনি।'' এর পরেই পড়শি বাড়ির দোতলা ছাদ থেকে তাঁরা দেখেন, ছাদে রাখা বিছানায় এক যুবক ঘুমোচ্ছে। চিৎকারে অনেকেই জড়ো হয়ে যান। ওই ছাদ টপকে এ বাড়ির ছাদে চলে এসে ওই যুবককে ঘিরে মারধরও শুরু হয়ে যায়। সঞ্জয়বাবুর দাবি, ''ছেলেটি উঠে বলে 'ভুল করে ছাদে উঠেছি। আমায় খেতে দাও, খিদে পেয়েছে'। কিন্তু ততক্ষণে পরিস্থিতি আমাদের হাতে ছিল না।''

 সঞ্জয়বাবুর মা লীলাবতি বলেন, "শরীরটা খারাপ ছিল বলে ঘরে ঘুমিয়েছিলাম। বৌমা রান্না করছিল। কখন বাড়িতে ঢুকেছে কে জানে!''