এ বার জেলা হাসপাতালে ক্যানসারের ওষুধ আর অঙ্কোলজিস্ট


সরকারি হাসপাতালে ক্যানসারের চিকিৎসা ব্যবস্থায় বদল আসতে চলেছে। ইতিমধ্যে পাওয়া গিয়েছে নবান্নের সবুজসঙ্কেত। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী অগস্ট থেকে নতুন নীতি অনুসারেই চলবে চিকিৎসা।

স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, ক্যানসারের অতি দামি ওষুধের যুক্তিযুক্ত কেনাকাটা, জেলাস্তরে ক্যানসারের ওষুধের সরবরাহ বাড়ানো এবং ক্যানসার আক্রান্তদের ভিড়কে বিভিন্ন হাসপাতালের মধ্যে বণ্টন করে তাঁদের চিকিৎসাপ্রক্রিয়ায় গতি আনাই নতুন নীতির লক্ষ্য।

নতুন নীতিতে, ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতালগুলিকে যোগ করা হচ্ছে নিকটস্থ এক-একটি মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে। জেলা হাসপাতালগুলিতে নিয়োগ হচ্ছেন অঙ্কোলজিস্ট বা ক্যানসার বিশেষজ্ঞ। কোন জেলা হাসপাতালে কত জন ক্যানসার রোগী আছেন, তাঁদের কার কোন ওষুধ দরকার তা সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজকে লিখিত ভাবে জানাবে যুক্ত হওয়া জেলা হাসপাতাল। সেই অনুযায়ী ওই মেডিক্যাল কলেজ ওষুধের বরাত দেবে। ওষুধ সরাসরি সরবরাহ হবে জেলা হাসপাতালে। শারীরিক পরীক্ষার জন্যও ওই জেলা হাসপাতাল থেকে রোগীরা যাবেন নির্দিষ্ট করে দেওয়া মেডিক্যাল কলেজে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, অপচয়ের অভিযোগে ক্যানসারের অতি দামি অন্তত ২৫টি ওষুধ কয়েক মাস আগে সরকারি তালিকা থেকে বাদ পড়েছিল। তার মধ্যে ১০টি ওষুধকে তালিকায় ফেরানো হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪ হাজার,৩৫ হাজার, ২৫ হাজার টাকা দামের ওষুধও রয়েছে। অপচয় এবং অপব্যবহার কমাতে এই ওষুধগুলি কেন্দ্রীয় ভাবে সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর্স (সিএমএস) অর্ডার দেবে। তার আগে কোন হাসপাতালে কত জন ক্যানসার রোগী রয়েছেন, কোন ওষুধ সেখানে কতটা দরকার বা আদৌ দরকার কি না, তা সিএমএসের অফিসারেরা যাচাই করবেন। তার পর সেই ওষুধ সরবরাহ হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে। ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থাকে টাকা দেবে সিএমএস।

যোগাযোগ

কোন জেলা হাসপাতালের সঙ্গে কোন মেডিক্যাল কলেজ জুড়ছে
(প্রাথমিক পরিকল্পনা)

• উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া—আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ

• দক্ষিণ ২৪ পরগনা—ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ

• মুর্শিদাবাদ—মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ

• বর্ধমান, বীরভূম—বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ

• বাঁকুড়া, পুরুলিয়া—বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ

• পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর—মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ

• মালদহ, দুই দিনাজপুর—মালদহ মেডিক্যাল কলেজ

• জলপাইগুড়ি, কোচবিহার—উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ

• হাওড়া, হুগলি—কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ

সূত্র—স্বাস্থ্য দফতর

অজয়বাবুর কথায়, ''হাসপাতালে ভিড়ের জন্য ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসায় দেরি হয়। তাই জেলা হাসপাতালগুলিতে অঙ্কোলজিস্ট নিয়োগ হচ্ছে। ইতিমধ্যে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও বারাসত হাসপাতালে অঙ্কোলজিস্টের পোস্টিং হয়ে গিয়েছে।'' তাঁর মতে, চিকিৎসার এই বিকেন্দ্রীকরণে যেমন কলকাতার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ক্যানসার রোগীর চাপ কমবে, তেমন জেলা থেকে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বেশি দূরে যেতে হবে না। পাশাপাশি তাঁরা দ্রুত ওষুধ ও কেমো পাবেন।