‘মমতাও মহিলা, কষ্টটা বুঝবেন’, প্রার্থনা দেবাশিসের মায়ের


টানা বারো দিনের অনশনের পরে জ্ঞান হারিয়ে শনিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র দেবাশিস বর্মন। অসুস্থ ছেলের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে রবিবার একটাই আর্জি মা ললিতা রায় সরকারের, ''ছাত্রদের হস্টেল সমস্যার সমাধানে দয়া করে মুখ্যমন্ত্রী এ বার নিজে হস্তক্ষেপ করুন!'' তাঁর কথায়, মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজে মহিলা। মায়েদের কষ্ট তিনি ঠিকই বোঝেন। 

হস্টেল বণ্টন ও পরিচালনা নিয়ে অরাজকতার অভিযোগ তুলে অনশনে বসেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্ররা। দেবাশিসের এক সহপাঠী জানিয়েছেন, ওই দিন সকাল থেকেই তাঁর জ্বর হয়। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাল চাকা চাকা দাগ দেখা যায়। এমনিতেই দীর্ঘ অনশনে দেবাশিসের শরীরে জলের পরিমাণ কমে গিয়েছে। শনিবার রাতে শৌচালয়ে যাওয়ার সময় দেবাশিস জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখনই তাঁকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইঞ্জেকশন দেওয়া হলেও তাঁর অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওষুধের পাশাপাশি এখনই খাবার ও জল না-খেলে দ্রুত পরিস্থিতি খারাপ হবে। তবে অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে দেবাশিস অনড়।

ডাক্তাররা বলছেন— শুধু দেবাশিস নন, অনশনে বসা অন্য পড়ুয়াদের শারীরিক অবস্থাও খুবই সঙ্গিন। আরও ঘণ্টা বারো অনশন চললে তাঁদের জীবন সংশয়ের আশঙ্কা যথেষ্ট। তবে শুধু নিজের ছেলে নয়, অনশনে বসা সব মেডিক্যাল পড়ুয়া যাতে আন্দোলন তুলে নিতে পারেন, সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ
চাইছেন দেবাশিসের মা। রবিবার অনশনরত ছাত্রদের সামনে আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে ললিতাদেবী বলেন, ''ছাত্রদের থেকে জানলাম, উচ্চতর কর্তৃপক্ষ এখন হস্টেল সমস্যার বিষয়টি দেখছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষই ছাত্রদের এই কথা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী তো স্বাস্থ্য দফতরের পূর্ণমন্ত্রীও। তিনিই এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন।'' ললিতা দেবী জানান, পড়ুয়াদের ন্যায্য দাবি মুখ্যমন্ত্রী মেনে নিলে মা হিসেবে তিনি কৃতজ্ঞ থাকবেন।