লোকে মাড়িয়ে যাচ্ছে, আমি পড়ে কাতরাচ্ছি


ক'দিন ধরেই দুর্যোগ চলছে। সোমবারও সকাল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি। ১০টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর সভার মাঠে ঢুকে দেখি জলকাদায় পা ফেলা দায়। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে মাঠের উত্তর দিকে লোহার ছাউনির নীচে চলে যাই। তখনও জানি না সেখানেই বিপদ অপেক্ষা করছে।

প্রধানমন্ত্রীর সভা বলে কথা। মাঠ তাই ভিড়ে ঠাসা ছিল। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে আমার মতো অনেকেই ছাউনির নীচে ঢুকে পড়েন। বৃষ্টি বাড়ায় ছাউনির নীচে ভিড়ও বাড়তে থাকে। পৌনে একটা নাগাদ নরেন্দ্র মোদী তখন সবে বলতে শুরু করেছেন। হঠাৎ শুনি চড়চড় শব্দ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই লোহার রড ভেঙে হুডমুড়িয়ে পড়ে যায় উত্তর দিকের গোটা ছাউনিটাই। প্রাণে বাঁচতে তখন ছোটার চেষ্টা করছি। কিন্তু চারদিকে থিকথিকে লোক। কোন দিক দিয়ে বেরবো ঠাহর করতে পারছি না। কোনওরকমে ভিড় ঠেলে এগনোর সময় দেখলাম অনেকে গড়াগড়ি খাচ্ছেন, চেয়ার ভেঙে পড়ে রয়েছে।

দৌড়তে গিয়ে একটা সময় আমিও মাটিতে পড়ে গেলাম। আমার পা মাড়িয়ে অনেকে চলে গেল। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছি। আর ভাবছি কী ভাবে এই মরণফাঁদ থেকে বেরোব। বেশ কিছুক্ষণ ভাঙা ছাউনির নীচে ও ভাবেই পড়েছিলাম। শেষে বিজেপির কয়েকজন কর্মী উদ্ধার করে আমাকে এক মঞ্চে নিয়ে আসেন। মঞ্চে চিকিৎসক ছিলেন। তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। পায়ে চোট নিয়ে আপাতত মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে এসে হাসপাতালের বেডে ঠাঁই হবে, এমনটা সত্যি ভাবিনি।