ভোটাভুটিতে নেই শিবসেনা, কক্ষত্যাগ বিজেডির, অনাস্থায় জোড়া ধাক্কা সরকারের


অনাস্থা নিয়ে সরগরম লোকসভা।

অনাস্থা ভোটের আগেই শাসক শিবিরে জোড়া ধাক্কা। এনডিএ-র অন্যতম বড় শরিক শিবসেনা অংশ নিচ্ছে না শিবসেনা। অন্যদিকে আলোচনার শুরুতেই কক্ষ ত্যাগ করলেন বিজু জনতা দলের সাংসদরা। বৃহস্পতিবার শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে জানিয়েছিলেন, অনাস্থা ভোটে তাঁরা অংশগ্রহণ করবেন কিনা, সেই সিদ্ধান্ত সন্ধের মধ্যে জানানো হবে। কিন্তু রাতের দিকে দলের তরফে জানানো হয়, শুক্রবার সকালেই সিদ্ধান্ত জানাবেন তাঁরা। সেই মতো এদিন সকালেই শিবসেনা জানিয়ে দেয়, অনাস্থা ভোটে অংশগ্রহণ করবেন না দলের ১৮ সাংসদ। সংখ্যার দিক থেকে এনডিএর সমস্যা না হলেও বরাবরের জোটসঙ্গী শিবসেনার ভোটে অংশ না নেওয়া বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

লোকসভায় চলছে অনাস্থা প্রস্তাবের উপর আলোচনা। আলোচনার শেষে হবে ভোটাভুটি। গোটা প্রক্রিয়ার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭ ঘণ্টা। মাঝে লাঞ্চ ব্রেকও হবে না বলে সূত্রের খবর। ম্যাজিক ফিগার নিয়ে এনডিএ তথা বিজেপি আত্মবিশ্বাসী থাকলেও লোকসভা ভোটে জয় পাওয়া সব আসন ধরে রাখা নিয়ে চিন্তায় বিজেপি। অন্যদিকে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরাও যতটা সম্ভব সংখ্যা বাড়াতে তৎপর। বিরোধীরা যে সরকারের বিরুদ্ধে একজোট সেটা প্রমাণেরও মরিয়া চেষ্টা চলছে।

প্রতিটি দলের সাংসদ সংখ্যার নিরীখে আলোচনার সময় বরাদ্দ করেছেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। সেই অনুযায়ী বিজেপি সাংসদরা আলোচনার সময় মোট তিন ঘণ্টা ৩৩ মিনিট। কংগ্রেসের জন্য বরাদ্দ ৩৮ মিনিট। দলের পক্ষে রাহুল গাঁধীর পাশাপাশি বলবেন মল্লিকার্জুন খড়্গে। কংগ্রেস, এনসিপি, সিপিআইএম, টিডিপি এবং এআইএমএম অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও লটারিতে টিডিপির প্রস্তাবই গৃহীত হয়। তাই সবার আগে টিডিপির সাংসদরা আলোচনা শুরু করবেন।

এআইএডিএমকে ২৯ মিনিট, তৃণমূল ২৭, বিজেডি ১৫ এবং টিআরএস-এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯ মিনিট সময়। কৃষি ও কৃষকদের সমস্যা, অর্থনীতির দুরবস্থা, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি, গুজবের জেরে গণপিটুনির মতো ইস্যুতে ঝড় তুলবেন কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। বিরোধীদের বক্তব্যের জবাবি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লোকসভার একটি সূত্রে খবর প্রধানমন্ত্রী প্রায় দেড় ঘণ্টার জবাবি ভাষণ দিতে পারেন। তারপর ভোটাভুটি হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

শুক্রবার সকালেই অনাস্থা নিয়ে টুইটে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ''সংসদীয় গণতন্ত্রে আজ গুরুত্বপূর্ণ দিন। আশা করি আমার সহকর্মীরা গঠনমূলক, সুসংহত ও বিশৃঙ্খলা মুক্ত আলোচনা করবেন। গোটা দেশ আজ আমাদের উপর নজর রাখবে এবং দেখবে।''

এর মধ্যেই চলছে রাজনৈতিক তরজাও। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ-কটাক্ষে রীতমতো সরগরম রাজধানীর রাজনৈতিক বাতাবরণ। রাহুল গাঁধীকে কটাক্ষ করে রাম মাধবের টুইট, ''অনাস্থার প্রস্তাবকের জন্য ১৩ আর 'ভূমিকম্প'-এর জন্য ৩৮ মিনিট বরাদ্দ হয়েছে।'' ভূমিকম্প বলতে রাহলের বক্তব্যকেই ইঙ্গিত করেছেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক।
থেমে নেই কংগ্রেসও। দলের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেছেন, সরকারের উচিত শ্বতপত্র প্রকাশ করে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা এবং জিডিপির সঠিক হার জানানো।