মেডিক্যালে উঠল অনশন, ১৪ দিন পর দাবি মানলেন কর্তৃপক্ষ

অনশনকারী ছাত্রদের জেদের জোরে কাটতে চলেছে হস্টেল সমস্যা। 


লাগাতার ৩৩৬ ঘণ্টা অনশনের পর মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়াদের দাবির কাছে  মাথা নোয়ালেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। অনশনকারীদের দাবি মতো হস্টেল সমস্যার সমাধান হওয়ার পর সোমবার দুপুরে অনশন তুলে নেন পড়ুয়ারা। বিজয় মিছিল করে তাঁদের এই নৈতিক জয় উদ‌্যা‌পন করবেন তাঁরা।

 এ দিন কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়, নতুন ১১ তলা হস্টেল ভবনে সিনিয়র ছাত্রদের জন্য দু'টি ফ্লোর ছেড়ে দেওয়া হবে। প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট পড়ুয়াদের জন্যও ওই ভবনে দু'টি করে ফ্লোর দেওয়া হচ্ছে।

 কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অশোক ভদ্র জানিয়েছে, "আমাদের এই সিদ্ধান্তের কথা লিখিত ভাবে স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হচ্ছে। নির্দেশ আসার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। আপাতত নতুন ভবনের দু'টি ফ্লোরে থাকবেন সিনিয়র ছাত্ররা। আরেকটি হস্টেল তৈরি হচ্ছে। সেটি শেষ হয়ে গেলে, সিনিয়র ছাত্রদের সেখানে স্থানান্তরিত করা হবে।" আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন, এই সিদ্ধান্তের কথা লিখিতভাবে পেলেই তাঁরা আন্দোলন তুলে নেবেন।

অন্যাদিকে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র আন্দোলন নিয়ে এ বার বিধানসভায় বিবৃতি দিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর বিবৃতিতে অসন্তুষ্ট বিরোধীরা প্রথমে বিধানসভার ওয়েলে নেমে এসে প্রতিবাদ জানান। পরে তাঁরা সভা থেকে ওয়াকআউট করেন।

সোমবার বিধানসভা শুরু হতেই বিরোধীরা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র আন্দোলন নিয়ে সরকার পক্ষের বিবৃতি দাবি করেন। সেই মতো বিবৃতি দেন চন্দ্রিমা। তিনি জানান,মেডিক্যাল কলেজে হস্টেল বন্টন নিয়ে যে আন্দোলন চলছে, তাতে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। গোটাটাই সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষের দেখার বিষয়। চন্দ্রিমা বলেন, ''হস্টেল বন্টন করার দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষের। এতে সরকারের কোনও হাত নেই। মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার নির্দেশ মতো প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের আলাদা রাখাই নিয়ম। রবিবারই স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন এটা পড়ুয়াদের প্রতীকী অনশন আন্দোলন।''
এই 'প্রতীকী অনশন আন্দোলন' বলার পরেই বিরোধীরা ক্ষেপে ওঠেন। আব্দুল মান্নান, সুজন চক্রবর্তী-সহ সকলেই ওয়েলে নেমে পড়েন। তখনও চন্দ্রিমা বলে চলেছেন, ''ডাক্তারির সিনিয়র পড়ুয়ারা হাসপাতালে রোগী দেখার কাজে যুক্ত থাকেন। কাজেই এই আন্দোলনে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। পড়ুয়াদের অনুরোধ করছি, এই প্রতীকী আন্দোলন তুলে নেওয়া হোক।'' চন্দ্রিমার বক্তব্যের মাঝেই বিধানসভা ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যান বিরোধীরা।