স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে


হুগলি : স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের। স্বামীর সম্পর্কের কথা জানতে চাওয়ায় কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারা হল গৃহবধূকে। মৃতের নাম চম্পা দাস (১৮)।  এদিকে ঘটনার পর গৃহবধূর শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অভিযুক্ত স্বামী সুব্রত দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপাড়ার মাখলা সারদাপল্লিতে। পণের দাবিতে বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, গৃহবধূর বাপের বাড়ি উত্তরপাড়ার রাজকৃষ্ণ স্ট্রিটে। বছর দুই আগে বাড়ির অমতে কাঠের কারিগর সুব্রতকে বিয়ে করেন নাবালিকা চম্পা। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ি সারদা পল্লিতেই থাকতেন তিনি। অভিযোগ, কয়েক মাস যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। যেহেতু বাড়ির অমতে বিয়ে, তাই যৌতুক কিছুই পায়নি শ্বশুরবাড়ির তরফ। বিয়েতে লাভ হয়নি। এই কারণে সুব্রত ও তার বাবা, মা বোন চম্পাদেবীকে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। এর মধ্যে সন্তানের জন্ম দেন ওই গৃহবধূ। তবে তাতে অত্যাচার কমেনি। মাঝে বেশ কয়েকবার তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বেরও করে দিয়েছে সুব্রতর পরিবার। পরে ফের আক্রান্ত চম্পাদেবীকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বাড়িতে ফিরেয়ে এনেছে সুব্রত। এত মারধরের পরও বাপের বাড়িতে যাননি ওই গৃহবধূ। তবে দিন ১৫ আগে নতুন ছন্দপতন ঘটে। সুব্রতর বন্ধুরা গৃহবধূকে জানান, তাঁর স্বামীর সঙ্গে এক মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। প্রায়ই তাকে নিয়ে দিঘা ও অন্যত্র ছুটি কাটাতে যায় সুব্রত। স্বামীর বন্ধুদের এই কথাতে প্রথমে সায় দেননি চম্পাদেবী। পরে যখন যুগলের ছবি তাঁকে দেখানো হয় তখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। এনিয়ে স্বামীকে প্রশ্ন করতেই অশান্তি বেড়ে যায়।

এরপর সোমবার সকালে জ্বলন্ত অবস্থায় বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন ওই গৃহবধূ। বৃষ্টির জমা জলে ঝাঁপ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে জীবনের ইতি টানেন চম্পাদেবী। এরপরেই আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্বামী সুব্রত দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পেয়েই তাঁর শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায় শ্বশুর শ্যামল দাস, শাশুড়ি অর্চনা দাস ও বড় ননদ মিঠু জানা। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ও ধৃতের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন প্রতিবেশীরা। পাশাপাশি মৃতার দিদি মৌসুমী রায়ের অভিযোগ, বোন চম্পা কখনওই আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাঁকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে।

Highlights

মৃতের শিশু সন্তানকে নিয়ে পলাতক শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

পণের দাবিতে গৃহবধূকে প্রায়ই মারধর করে বের করে দেওয়া হত।