প্রেমে না, তরুণীকে কুপিয়ে ধৃত যুবক


গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিলেন বছর উনিশের তরুণী। সকাল ৯টা নাগাদ এক বান্ধবীর সঙ্গে ফিরছিলেন সেখান থেকে। হঠাৎই পথ আটকায় পরিচিত এক যুবক। প্রেমের প্রস্তাব দেয় মেয়েটিকে। তরুণী উচ্চবাচ্য না করায় ভোজালি বের করে কোপাতে থাকে।

শনিবার বসিরহাটের মাটিয়া থানার মালতিপুর গ্রামের এই ঘটনায় জনতা পাকড়াও করে হামলাকারী যুবককে। মারধর করা হয়। স্থানীয় কিছু মানুষ তাকে উদ্ধার করে একটি ঘরে আটকে রাখেন। পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে আলি হোসেন মণ্ডল নামে ওই যুবককে। জখম তরুণী বসিরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর গলায়, হাতে, পিঠে, মাথায় কোপ লেগেছে।

কচুয়ার গ্রামে থাকে আলি। তরুণীর বাড়ি কাছেই। স্থানীয় স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়েন তিনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আলি তাঁকে আগেও প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে। নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করত। মাস ছ'য়েক আগে মেয়েটি বাড়িতে সে সব কথা জানান। বাবা যোগাযোগ করেন আলির পরিবারের সঙ্গে। পরের কয়েক মাস আর উপদ্রব করেনি আলি। তার পরে হঠাৎ এ দিনের আক্রমণ।

হাসপাতালে শুয়ে তরুণী বলেন, ''আলির ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। ওর প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সে কথাটা স্পষ্ট করে জানিয়েছিলাম। তার পরেও আমাকে নানা ভাবে বিরক্ত করত। ওর পরিবারকে জানানো হয়েছিল। তার পরেও এ ভাবে আমাকে আক্রমণ করবে ভাবতে পারিনি।''

ছেলেটির কথায়, ''কেন আমাকে ও ভালবাসে না, সেটাই জানতে গিয়েছিলাম। কোনও কথার উত্তর না দেওয়ায় মাথাটা গরম হয়ে গেল।''

প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে আক্রমণের ঘটনা মাঝে মধ্যেই শোনা যায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে কোন্নগরের বাড়িতে ঢুকে এক তরুণীকে গুলি করে খুন করে এক যুবক। মেয়েটির সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন তরুণী। সে কারণেই খুন হতে হল তাঁকে, তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে পুলিশ।

অপরিসীম অধিকারবোধই এ ধরনের ঘটনার পিছনে কাজ করে, জানাচ্ছেন মনোবিদ তীর্থঙ্কর দাশগুপ্ত। তাঁর মতে, প্রেমে পড়া যেমন ব্যক্তিগত অধিকার, প্রেমের প্রস্তাব ফেরানোর অধিকারও আছে সকলের। সে কথাটা সামনের মানুষটা না বুঝলেই বিপত্তি। প্রেমিক বা প্রেমিকা যে আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটা বোঝার দরকার আছে।