সোশ্যাল মিডিয়ায় ছক বদল জঙ্গিদের


চলতি মাসের গোড়ার দিকে কাশ্মীরে ছড়িয়ে পড়েছিল একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা। বার্তাটি দেখে মনে হয়, কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষায় বিফল পরীক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্ট সংগঠন। তবে এটা যে সে প্রবেশিকা নয়। কারণ বার্তাটি প্রচার করেছিল হিজবুল মুজাহিদিন।

কী ছিল সেই বার্তায়? হিজবুল বলেছিল, ''আমরা প্রচুর মুজাহিদিন নিয়োগ করেছি। কাশ্মীরের যে সব ভাইয়েরা সংগঠনে যোগ দিতে পারলেন না তাঁদের জানাচ্ছি, আশা ছাড়বেন না। মন শক্ত করুন। এক দিন না এক দিন আপনারা ডাক পাবেন।'' বার্তাটি হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুবার্ষিকীর কাছাকাছি সময়ে ছড়িয়েছিল। সেটি জঙ্গিদের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের নয়া কৌশলের ভাল উদাহরণ বলে মনে করেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের মতে, ২০১৫ সালে বুরহান ও তার সঙ্গীদের অস্ত্র হাতে ছড়িয়ে পড়া ছবি জঙ্গিদের প্রচারে বড় বদল এনেছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল, কাশ্মীরের নয়া প্রজন্মের জঙ্গিরা আর মুখ ঢেকে ক্যামেরার মুখোমুখি হতে চায় না।

২০১৬ সালে বুরহান নিহত হওয়ার পরে কাশ্মীরে অশান্তি শুরু হয়। বাড়ে জঙ্গি দলে যোগ দেওয়ার প্রবণতাও। তখন দক্ষিণ কাশ্মীরের গ্রামে গ্রামে এক নয়া পোস্টার দেখা গিয়েছিল। তাতে হাজির ছিল হিজবুল জঙ্গিদের নয়া দলের সদস্যেরা।

বুরহানের মৃত্যুবার্ষিকীকে দু'বছর ধরেই যুবকদের জঙ্গি দলে ভেড়ানোর জন্য ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই সময়ে 'বিশেষ নিয়োগ'-এর ডাক দেয় হিজবুল মুজাহিদিন। সেইসঙ্গে শিক্ষিত যুবকদের আকর্ষণ করতে বুরহানের শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরেও গুরুত্ব দেওয়া হয় প্রচারে।

এর পাশাপাশি সমাজের 'নৈতিক রক্ষী' হিসেবেও নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করছে হিজবুল জঙ্গিরা। অনেক সময়েই এক ব্যক্তিকে 'শাস্তি' দেওয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ করা হচ্ছে। তাতে জঙ্গিদের মারধরের মুখে সেই ব্যক্তিকে স্বীকার করতে দেখা যাচ্ছে, সে মদের চোরাকারবারী, যৌন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এবং পুলিশের চর। পুলিশের মতে, হিজবুল বোঝাতে চাইছে তারা ভারতের 'সাংস্কৃতিক আগ্রাসন'-এর ফলে কাশ্মীরি সমাজে ঘুণ ধরছে। তারা এই 'অপসংস্কৃতি'-র বিরুদ্ধেও লড়াই চালাচ্ছে।