মন্দিরের মধ্যে ধর্ষিতাকে পুড়িয়ে মারল দুষ্কৃতীরা


লখনউ : ফিরে এল আসিফা স্মৃতি৷ এবার নৃশংসতার নজির গড়ল উত্তরপ্রদেশ৷ দুই সন্তানের মাকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করে মন্দিরের ভিতর পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল রাজ্যের সম্বলে৷ ৫ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি এই ঘটনার পিছনে রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷

সূত্র অনুযায়ী, ধর্ষণের পরে প্রাণ বাঁচাতে ওই মহিলা উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন৷ ১০০ ডায়াল করে সাহায্যের প্রার্থনা করতে চেয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু তাঁর সেই ফোন কেউ ধরেনি বলে অভিযোগ৷ ধর্ষণে বাধা দিতে চেয়েছিলেন ওই মহিলা৷ সেই 'অপরাধে' পুড়িয়ে মারা হল তাঁকে৷ সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে বছর পঁয়ত্রিশের ওই মহিলা বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন৷ সঙ্গে ছিলেন স্বামী ও দুই সন্তান৷ তখনই অজ্ঞাতপরিচয় ওই দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকে পড়ে৷ শনিবার রাত ২.৩০ নাগাদ এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে৷

মহিলার স্বামী জানিয়েছেন অভিযুক্ত ৫ ব্যক্তি এক এক করে বাড়িতে ঢুকে মহিলাকে ধর্ষণ করে৷ তারপর বেরিয়ে যায়৷ পরে ফের ফিরে আসে তারা৷ মহিলাকে জোর করে টেনে নিয়ে যায় গ্রামেরই এক মন্দিরে৷ সেখানে যজ্ঞশালায় ওই মহিলাকে পুড়িয়ে মারা হয় বলে জানিয়েছেন মহিলার স্বামী৷

পুলিশ পরে ঘটনাস্থলে আসে৷ ওই পরিবারকে এফআইআর দায়ের করতে বলা হয়৷ আশ্বাস দেওয়া হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার৷ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে৷ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে পুলিশ জানিয়েছে ওই পরিবার এফআইআর করলেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে৷ অভিযুক্তদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে৷ পরবর্তী তদন্ত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরে করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ডি (গণধর্ষণ), ৩০২ (খুন), ২০১(প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা), ১৪৭( নৃশংসতা) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ এই ঘটনার তদন্তে দুটি দল পৃথক ভাবে কাজ করছে৷ সন্দেহভাজন জায়গায় চালানো হচ্ছে তল্লাশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় থানার অফিসার আকিল আহমেদ৷

গত এপ্রিলে একই দিনে চারটি যৌন নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনা ঘটে উত্তরপ্রদেশে৷ নিগৃহীতাদের মধ্যে তিনজন নাবালিকা। উন্নাওয়ে ১৭ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে তখনই যথেষ্ট অস্বস্তিতে ছিল যোগী সরকার। একদিনে একটি ধর্ষণ ও ৩টি যৌন হেনস্থার অভিযোগে এই অস্বস্তি যে আরও বাড়ল তাতে সন্দেহ নেই।

দেশে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে মোদি সরকারও। সেই অস্বস্তি ঢাকতেই ধর্ষকদের শাস্তির ব্যাপারে আরও কড়া পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। ১২ বছর বয়সী পর্যন্ত শিশুদের ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার জন্য অর্ডিন্যান্সে সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। যে অর্ডিন্যান্সে পরে সায় দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।