এবার ওয়েটিং রুমে বসতে গেলেও কাটতে হবে ১০ টাকার টিকিট


ওয়েটিং রুমে হাত-পা ছড়িয়ে বসতে গেলেও এবার কাটতে হবে টিকিট! তবে সঙ্গে দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিটও থাকা চাই। প্ল্যাটফর্ম টিকিটের পর ভারতীয় রেলের নবতম সংযোজন এই ওয়েটিং রুম টিকিট। যার মূল্য ১০ টাকা। নয়া ব্যবস্থায় যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি রেলের লক্ষ্য লক্ষ্মীর ঝাঁপি যেনতেন প্রকারেণ ভরিয়ে তোলা৷

ইচ্ছা হলেই বিনা পয়সায় আর রেলের যাত্রী বিশ্রামাগারে গিয়ে বসে থাকা যাবে না। ১০ টাকার টিকিট কেটে ঢুকতে হবে সেখানে। অন্তত আগামী দিনে তেমনই পরিকল্পনা রেলমন্ত্রকের। দিনকয়েক হল পরীক্ষামূলকভাবে নিউ দিল্লি এবং হজরত নিজামুদ্দিন স্টেশনে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সেখানে যাত্রীদের মধ্যে বিষয়টির প্রতিক্রিয়া দেখে তবেই অন্যান্য স্টেশনে তা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী দিনে হাওড়া-শিয়ালদহ সহ অন্যান্য জায়গাতেও এই ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে।

রেলসূত্রে খবর, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে পুরনো ওয়েটিং রুমের ভোল সম্পূর্ণভাবেই বদলে ফেলা হচ্ছে। ওয়েটিং রুমে লাগছে আধুনিকতার ছোঁয়া। থাকছে এসি, টিভি, আধুনিক গদিওয়ালা চেয়ারও। যাত্রীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেই মতো করেই সাজানো হচ্ছে এই বিশ্রামাগার। ওয়েটিং রুমের পাশেই থাকছে টিকিট কাউন্টার।

বেসরকারিকরণের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়া ভারতীয় রেল গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলির ওয়েটিং রুম ছেড়ে দিতে চেয়েছিল বাণিজ্যক সংস্থার হাতে। প্রবল বিরোধিতায় প্রাথমিকভাবে সেই পথ থেকে সরে এলেও এই 'প্রবেশমূল্য' তার প্রথম ধাপ বলেই মনে করছেন রেল কর্তারা। রেলের দাবি, বহু যাত্রী রয়েছেন, যাঁদের কাছে বৈধ টিকিট না থাকা সত্ত্বেও ওয়েটিং রুমে ঢুকে তারা বসে থাকেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা৷ খাওয়া-দাওয়া করে ওয়েটিং রুম নোংরাও করেন। যাঁদের দূরপাল্লার ট্রেনের বৈধ টিকিট রয়েছে, তাঁরাই বসতে পারেন না। তৈরি হয় জটিলতা। মূলত, এসব আটকাতেই এই টিকিট সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা রেলের। আর এভাবে রেলের আয়ও হবে ভালই। আপাতত দিল্লি, পরে বাকি স্টেশনেও ওয়েটিং রুম চার্জ নেওয়া হবে। তবে একজন যাত্রীর এই ১০ টাকার টিকিট আপাতত গোটা দিনের জন্য বৈধ থাকলেও ভবিষ্যতে ঘণ্টা অনুযায়ী হতে পারে।

রেলের এক কর্তার কথায়, নয়া নিয়ম সাধারণ যাত্রীরা কেমনভাবে দেখে, সেটাই  দেখতে চাইছে রেল কর্তৃপক্ষ৷ যাত্রীদের মধ্যে যাতে কোনওভাবে অসন্তোষ না দেখা যায়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। কয়েকবছর আগে প্ল্যাটফর্ম টিকিট চালু নিয়ে সাময়িক অসন্তোষ হলেও পরে যাত্রীরা মেনে নেন। এক্ষেত্রেও তেমনটা হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে৷