কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩১টি ডিগ্রি কলেজে আসন ফাঁকা ৪০ হাজার!


কলেজে ভর্তির সময়সীমা শেষ হয়েছে ১০ জুলাই। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩১টি ডিগ্রি কলেজে ফাঁকা থেকে যাওয়া আসনের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার বলে কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন। সেগুলির অধিকাংশই সংরক্ষিত আসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, সরকারি নিয়ম মেনেই ওই সব সংরক্ষিত আসন অসংরক্ষিত করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। শূন্য আসন আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সামগ্রিক রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে রাজ্য সরকারকে।

এ বার স্নাতক স্তরে ভর্তিকে কেন্দ্র করে আর্থিক দুর্নীতি চক্রের অভিযোগ ওঠে ব্যাপক ভাবে। তার জেরে ভর্তি প্রক্রিয়ায় গোলমালও হয় বিস্তর। ৬ জুলাই ছিল ভর্তির শেষ দিন। পরে উচ্চশিক্ষা দফতর সময়সীমা বাড়িয়ে করে ১০ জুলাই।

কিন্তু ১০ জুলাইয়ের পরে সব কলেজ থেকে পাওয়া রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, মোট আসনের ৪৮ শতাংশ সংরক্ষিত এবং সেই সংরক্ষিত আসনের অর্ধেকেরও বেশি ফাঁকা। অসংরক্ষিত আসনও ফাঁকা রয়েছে অনেক। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, ১৩১টি কলেজে অনার্স-সহ আসন-সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ ৩০ হাজার। তার মধ্যে প্রায় ৬০ হাজারই সংরক্ষিত। তারও মধ্যে ৩৫ হাজারের মতো আসনে কেউ ভর্তি হননি। তার সঙ্গে রয়েছে অসংরক্ষিত ক্ষেত্রের ফাঁকা আসন। তাই সব মিলিয়ে ফাঁকা আসনের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪০ হাজার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানান, কয়েকটি কলেজকে বলা হয়েছে, তারা যেন রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরে বিষয়টি জানায়। যাতে ফাঁকা সংরক্ষিত আসনগুলিকে অসংরক্ষিত ঘোষণা করে এ বছরের মতো সাধারণ পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া যায়। তিনি বলেন, ''ওই দফতর থেকে অনুমোদন পেলে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিকে ফের ভর্তি শুরু করার অনুমতি দেওয়া হবে। সরকারের কাছে সবিস্তার রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।''

কিন্তু যে-সব কলেজে অসংরক্ষিত আসনও ফাঁকা থেকে গিয়েছে, সেখানে কী হবে? এই বিষয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তা কিছু বলতে চাননি। তবে বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেনের অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্য বলেন, ''কিছু সংরক্ষিত আসনকে অসংরক্ষিত করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের ভর্তির অনুমতি দিচ্ছে না। তাই সেই সব আসনে ভর্তি নেওয়া যাচ্ছে না।''

কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ, শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া, বেথুন, লেডি ব্রেবোর্ন, বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেনের মতো বহু কলেজেই আসন ফাঁকা রয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও প্রবেশিকাই শুরু হয়নি। ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে প্রেসিডেন্সিতে। সেটা সম্পূর্ণ হলে আরও বেশি আসন ফাঁকা থেকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। লেডি ব্রেবোর্নের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার বলেন, ''ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় যদি সময়সীমা বাড়ায়, তা হলে আমরা নিশ্চয়ই ফের ভর্তি নিতে পারব।'' বেথুন কলেজের অধ্যক্ষা মমতা রায়ও জানান, সব আসন পূরণ করাই তাঁদের লক্ষ্য।

এ বছর থেকে সিমেস্টার পদ্ধতি চালু হয়েছে। জুলাইয়েই ক্লাস শুরু হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে টালবাহানা চলতে থাকায় ছাত্রছাত্রীরা চিন্তিত। সমস্যার মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবছে, সেই বিষয়ে যোগাযোগ ফোন করা হলে উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন তোলেননি। জবাব দেননি এসএমএসেরও।