পাত্রী হিন্দু, গাজিয়াবাদে মুসলিম যুবককে ফেলে মার


বিয়ে করেননি। শুধুমাত্র হিন্দু মেয়েকে নিয়ে তাঁর পূর্ণ সম্মতিতে আইনজীবীর কাছে বিয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে গিয়েছিলেন। এই অপরাধে এবার খাস আদালত চত্বরের মধ্যেই মুসলিম যুবককে বেধড়ক মারধর করা হল। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ আদালতে আইনজীবীর চেম্বারের কাছে এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ এসে ওই যুগলকে উদ্ধার করে একটি মামলা দায়ের করেছে। খোঁজ চলছে অভিযুক্তদের। ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

আক্রান্ত যুবক মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। তরুণীর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। কর্মসূত্রে দু'জন নয়ডায় থাকেন। সেখানেই দু'জনের আলাপ এবং প্রেম। দু'জনই বিয়ে করবেন ঠিক করে সোমবার গাজিয়াবাদ আদালতে এক আইনজীবীরর চেম্বারে যান পরামর্শ করতে। সেই সময় তাঁদের কথোপকথন শুনে আদালত চত্বরে  কিছু লোকের সন্দেহ হয়, ওই হিন্দু তরুণীকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফুঁসলিয়ে নিয়ে এসেছেন ওই যুবক।

এই সন্দেহের বশেই ওই যুগলকে আটক করে ওই দলটি। তরুণী ছাড় পেলেও যুবককে বেধড়ক মারধর শুরু হয়। ভরা আদালত চত্বরেই টেনে হিঁচড়ে ঘোরানো হয় ওই যুবককে। তরুণী বারবার আপত্তি করলেও তাঁর কথা কেউ কানে তোলেননি। 

তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ চলে আসে। তাতে প্রাণে বেঁচে যান ওই যুবক। দু'জনকেই উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তবে ভয়ে কেউই লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে চাননি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নিয়ে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরু করেছে। গাজিয়াবাদের পুলিশ সুপার আকাশ তোমর বলেন, ''দু'জনই সাবালক। স্বেচ্ছায় তাঁরা বিয়ে করতে চান। যাঁরা তাতে বাধা দিয়েছেন এবং মারধর করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।''

ঘটনার সময় একজন মোবাইলে ভিডিও তুলে রেখেছিলেন। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নানা মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। গোরক্ষার নাম করে কিংবা শিশু চুরির গুজবে প্রায় প্রতিদিনই গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটছে। এবার শুধুমাত্র ভিনধর্মে বিয়ে করতে যাওয়ায় এ ভাবে গণপিটুনির শিকার হওয়ায় দেশ জুড়েই উদ্বেগ বাড়ছে। সেই সঙ্গেই বিদ্বেষও বাড়ছে বলেই মনে করছেন সমাজতাত্ত্বিকরা।