প্রকাশ্যে আধার নম্বর দিলেন ট্রাই চেয়ারম্যান, ফেরত পেলেন নিজের ব্যক্তিগত তথ্য


ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আধার কার্ডের প্রস্তাব আনার সময় তিনি সবার আগে সম্মতির হাত তুলেছিলেন। আর এস শর্মা এখন টেলিফম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার প্রধান। কিন্তু এখনও আধার কার্ডের গুরুত্বের উপর তাঁর অগাধ ভরসা। আর সেই ভরসা ও বিশ্বাসের উপর আস্থা রেখেই আর এস শর্মা মনে মনে একখানা বড়সড় চ্যালেঞ্জ নেওয়ার পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। তিনি একশো শতাংশ নিশ্চিত, আধার কার্ডের নম্বর জানলেও কেউ আপনার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। নিজের এই ধারণা ও বিশ্বাসকেই তিনি জনস্বার্থে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তাই টুইটারে নিজের আধার নম্বর দিয়ে লিখলেন, ''দেখি এই নম্বরটা পেয়ে কে আমার কেমন ক্ষতি করতে পারে! এটা চ্যালেঞ্জ।''

গত এক বছরে আধার কার্ডে প্রদত্ত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন উঠেছে। আধার কার্ডে দেওয়া ব্যাক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বারবার। যদিও সরকার পক্ষের কেউই কখনও এই অভিযোগ সর্বোতভাবে মেনে নেননি। তাদের বরাবরের যুক্তি, আধার কার্ডের তথ্য ফাঁস হলে কারও কোনও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু এস শর্মা চ্যালেঞ্জ করে যা ফেরত পেলেন তাতে আপনিও চমকে উঠতে পারেন। টুইটারে নিজের আধার কার্ড নম্বর দিয়ে চ্যালেঞ্জ করার পর নিজের ফোন ও আধার নম্বর ফেরত পেলেন তিনি। অনেকে আবার তাঁকে সতর্ক করলেন, এমন কাজ যেন তিনি ভবিষ্যতে না করেন। কেউ আবার বললেন, শর্মা যদি লিখিত আকারে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার বিবৃতি দেন তা হলে আধার নম্বর মারফত তাঁর ব্যক্তিগত অনেক তথ্য সামনে তুলে ধরা যেতে পারে।

মোবাইল নম্বর, প্যান কার্ড নম্বর, বাড়ির ঠিকানা, জন্ম তারিখ, ব্যক্তিগত ছবিসহ অনেক কিছুই টুইটার ব্যবহারকারীদের থেকে ফেরত পেলেন ট্রাই প্রধান। তবে চাপের মুখে তিনি অবশ্য মাথা নোয়ালেন না। উল্টে বললেন, ''ফোন নম্বর বা প্যান নম্বর কারও কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। যেটাতে ক্ষতি হতে পারে এমন কিছু কেউ করতে পারে নাকি দেখি!'' সাহস হোক বা দুঃসাহস, শর্মা কিন্তু চালিয়ে খেলবেন বলেই ঠিক করেছিলেন। কেউ কেউ আবার তাঁকে ব্যক্তিগত তথ্য সোশ্যাল সাইটে তুলে দেওয়ার জন্য 'বোকা' বলেও ব্যঙ্গ করেছিলেন। শর্মার যুক্তি ছিল, ''এগুলো কোনও রাষ্ট্রীয় তথ্য নয়। আমার দেওয়া এই তথ্যগুলো কোনও গোপন তথ্য নয়।''

শর্মার এমন নাটকীয় কার্যকলাপ কি বিচারক শ্রীকৃষ্ণ কমিটিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জের জন্য? অনেকে তেমনটাই মনে করছেন। কারণ, তাঁর এমন চ্যালেঞ্জের ঠিক একদিন আগেই শ্রীকৃষ্ণ কমিটি আধার কার্ড সংশোধনী বিলের হয়ে সওয়াল করেছিল। আম আদমির ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত করতে এই বিলের প্রস্তাব আনা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আধার কার্ডে দেওয়া তথ্য ফাঁস হওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।