যোনির অঙ্গচ্ছেদ ধর্মীয় কারণেও নয়, মত সুপ্রিম কোর্টের


শিশুদের 'জেনিটাল মিউটিলেশন' বা যোনির অঙ্গচ্ছেদ করা কোনও ধর্মীয় প্রথার অংশ হতে পারে না। কেন্দ্রের সঙ্গে এক হয়ে সোমবার এই মত দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি খানউইলকর ও বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, ১৮ বছরের কম বয়সের শিশুকন্যার যৌনাঙ্গে ক্ষতি হতে পারে, এরকম কোনও প্রথা সম্পূর্ণ বেআইনি।

দাউদি বোহরা নামের একটি মুসলিম ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে এই যোনির অঙ্গচ্ছেদ বা খাতনা প্রথার চল আছে। প্রধানত, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, রাজস্থান ও দিল্লিতেই বসবাস এই জনগোষ্ঠীর। এই প্রথায় শিশুকন্যাদের যোনির বাইরের কিছু অংশ কেটে বা ছেঁটে ফেলা হয়। আফ্রিকা ও এশিয়ার কয়েকটি দেশে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে এই প্রথার চল ছিল। কিন্তু অনেক দেশই এখন এই প্রথাকে বেআইনি ঘোষণা করেছে।

এই মামলায় 'দাউদি বোহরা উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন ফর রিলিজিয়াস ফ্রিডম'র তরফে কংগ্রেস নেতা ও আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সুপ্রিম কোর্টে জানান, এই ধর্মীয় প্রথা প্রায় ১০০০ বছর ধরে পালন করে আসছে এই ধর্মীয় গোষ্ঠী। ধর্মীয় প্রথা পালন করার সাংবিধানিক অধিকার সকলের রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর যুক্তি, শিশুকন্যাদের যৌনাঙ্গের কিছু অংশ কেটে বাদ দেওয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্যহানির কোনও সম্পর্ক নেই।

সরকারের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল যোনির অঙ্গচ্ছেদ বা 'খাতনা' প্রথা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন শীর্ষ আদালতে। ছোটবেলার এই আতঙ্ক বড় হলেও মন থেকে পুরোপুরি মুছে যায় না, এমনটাই মত ভেনুগোপালের।

যদিও সরকারের বক্তব্যের বিরোধিতা করে পুরো বিষয়টিকে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছেন সিঙ্ঘভি। তিন-তালাক, নিকা হালালা ও একাধিক স্ত্রী থাকার বিষয়গুলি এই বেঞ্চেই বিচারাধীন।

এই মামলায় আবেদনকারী সুনিতা তিওয়ারি শীর্ষ আদালতে জানিয়েছিলেন, দেশের অন্যতম শিক্ষিত গোষ্ঠীগুলির মধ্যেই পরে 'দাউদি বোহরা' জনগোষ্ঠী। আর ভারতে একমাত্র এই মুসলিম জনগোষ্ঠীই শিশুকন্যাদের 'খাতনা' করিয়ে থাকে। তাই বিষয়টি শুধুই ধর্মীয়, এমনটা নয়।