ফের ধূপগুড়ি, ছেলেধরা গুজবে প্রকাশ্যে নগ্ন করে মার ৪ মহিলাকে


ছেলেধরার গুজবে সোমবার উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে ৪ মহিলাকে বেধড়ক মারল স্থানীয় লোকজন। এর মধ্যে দুই মহিলাকে আবার বিবস্ত্রও করে অভিযুক্তরা। আক্রান্তদের উদ্ধারে পুলিশ তত্‍‌পরতা না-দেখালে, তাঁদেরও মর্মান্তিক পরিণতি হতে পারত। 

ধূপগুড়ি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত জানিয়েছেন, উন্মত্ত জনতার হাত থেকে ৪ মহিলাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, সোমবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

দেশের সর্বত্রই এখন ছেলেধরার গুজব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবের জেরে এরমধ্যেই একাধিক গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গুজবের বাড়বাড়তে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র এ ধরনের ঘটনায় রাশ টানতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই ঘটনারই সাম্প্রতিকতম সংযোজন জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি।

পুলিশ সূত্রে খবর, আক্রান্তদের মধ্যে তিন মহিলারাই বাড়ি ধূপগুড়িতে। এর মধ্যে দুই মহিলা থাকেন শহরের হাসপাতাল পাড়ায়। একজনের বাড়ি স্টেশন মোড়ে। চতুর্থ জনের বাড়ি শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ে। ধূপগুড়ি শহর থেকে ৫ কিলোমিটার ভিতরে দাউকিমারি গ্রামে তাঁরা গিয়েছিলেন যে যাঁর ব্যক্তিগত কাজে। 

পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ওই গ্রামে এক মাইক্রো ফিন্যান্স কোম্পানির অফিসে গিয়েছিলেন দুই মহিলা। আর এক মহিলা গিয়েছিলেন আত্মীয়ের বাড়ি। অন্যজন শাড়ি বেচতে গিয়েছিলেন ওই গ্রামে।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গ্রামের বাজারের সামনে কয়েক জন ওই চার মহিলাকে দেখে ছেলেধরার গুজব রটিয়ে দেয়। তারপরেই আশপাশের লোকজন ওই চার মহিলাকে মারধর শুরু করে। স্থানীয় একটি ক্লাবে নিয়ে গিয়েও চলে নিগ্রহ। সেসময় দুই মহিলাকে নগ্ন করেও পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ। 

এর মধ্যেই ঘটনার খবর যায় থানায়। দ্রুত পুলিশ ফোর্স চলে আসে। লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করা হয় মারমুখী জনতাকে। এরপর চার মহিলাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে, বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। 

সপ্তাহখানেক আগে এই ধূপগুড়িরই কদমতলা গ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলাকে ছেলেধরা সন্দেহে পিলারে বেঁধে পেটানো হয়। ওই ঘটনায় বিজেপির এক নেত্রী তারামণি রায়ের বিরুদ্ধে সুয়োমটু মামলা দায়ের করে পুলিশ। তারামণি জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির মহিলা মোর্চার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বিজেপির তারামণি রায়ের নেতৃত্বেই মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলাকে পেটানো হয়েছিল।