রাজ্যে নতুন ৬টি মেডিক্যাল কলেজ, অনুমোদন নবান্নের


কলকাতা: ২০১৬ সালের বিধানসভার নির্বাচনী বৈতরণী হাসতে হাসতে পার করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম হাতিয়ার ছিল বাংলার স্বাস্থ্যক্ষেত্রের ব্যাপক উন্নতি। সূত্রের খবর, আসন্ন ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও মমতার অন্যতম ইউএসপি হতে চলেছে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নতি। কিছুদিন আগেই পাঁচ মেডিক্যাল কলেজের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রায়গঞ্জ, কোচবিহার, ডায়মন্ডহারবার, রামপুরহাট ও পুরুলিয়ায় জোরকদমে কলেজ নির্মাণের কাজ চলছে। এবার রাজ্যে আরও ছ'টি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ছাড়পত্র দিল নবান্ন। সেগুলি হবে যথাক্রমে জলপাইগুড়ি, আরামবাগ, ঝাড়গ্রাম, তমলুক, উলুবেড়িয়া এবং বারাসতে। এর মধ্যে জলপাইগুড়ি ও আরামবাগের প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজের ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট বা ডিপিআর জমা পড়েছে। বাকিগুলিরও কাজ চলছে জোরকদমে। প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হবে ১০০ আসনের। গড়তে আনুমানিক ২০০-২৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথভাবে সে খরচ বহন করার কথা।

ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলা লোকসভা ভোটের আগেই প্রস্তাবিত এই ছ'টি মেডিক্যাল কলেজের প্রাথমিক কাজ শেষ করতে চাইছে মমতার স্বাস্থ্যদপ্তর। আর কাজ সম্পূর্ণ করতে চাইছে ২০২১ সালের বিধানসভার লড়াইয়ের আগেই। সেভাবেই ভোটযুদ্ধের প্রচারে বাম-বিজেপি'র বিরুদ্ধে অস্ত্র শানাবেন মমতার সেনাপতিরা।

এ বিষয়ে রবিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, গোটাটাই মুখ্যমন্ত্রীর দূরদর্শী পরিকল্পনার ফসল। পাঁচ মেডিক্যালের কাজ চলছে জোরকদমে। আরও ছ'টি শেষ হলে রাজ্যে সবশুদ্ধ ২৯টি মেডিক্যাল কলেজ হবে। আসন সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আর খরচ বহন করার কথা বলছেন? ওরা (পড়ুন কেন্দ্র) কি দয়া করছে নাকি? ওদের টাকা আমাদেরই হকের টাকা। পাশাপাশি আমরাও খরচ করব। লক্ষ্য দুটি। এক, চিকিৎসকের অভাব মেটানো। দুই, মেডিক্যাল শিক্ষায় বাংলার নাম এক নম্বরে নিয়ে আসা।

সূত্রের খবর, কল্যাণীতে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত মেডিক্যাল কলেজ ধরলে রাজ্যে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ১৪টি। শ্রমমন্ত্রকের ইএসআই জোকার মেডিক্যাল কলেজ এবং তিনটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ তালিকায় আনলে সবসুদ্ধ মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ১৮টি। কাজ চলতে থাকা পাঁচটি ও প্রস্তাবিত ছ'টি হিসেবে ধরলে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা তিন–চার বছরের মধ্যে বেড়ে হওয়ার কথা ২৯টি।

স্বাস্থ্যভবনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, এই পরিকল্পনা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত করা যায়, শুধুমাত্র মেডিক্যাল কলেজ ও এমবিবিএস আসন সংখ্যার বিচারে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের 'মেডিক্যাল এডুকেশন হাব' হিসেবে পরিণত হবে বাংলা। কারণ, এখনও পর্যন্ত মেডিক্যাল শিক্ষায় দেশজুড়ে সাম্রাজ্য চালাচ্ছে দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারত। কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও কেরলের মেডিক্যাল কলেজে সংখ্যা বাংলার থেকে অনেক অনেক বেশি। তাদের ছুঁতে দরকার জোর দৌড়। তাই চাইছেন মমতা।