প্রেমে সাড়া না দেওয়ায় তরুণীর গালে এলোপাথাড়ি কোপ


কলকাতা: বার বার আবেদন নিবেদন করেও প্রেমে সাড়া না দেওয়ায় আক্রোশবশত এক তরুণীর দুই গালে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়েছিল এক যুবক। ওই ঘটনায় পায়ুম খান নামে ওই যুবককে তিন বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিল আদালত। সোমবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের চতুর্দশ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এমএম) বিনোদ মাহাত ওই আদেশ দিয়েছেন। বিচারক ওই সাজার সঙ্গে ওই তরুণীর হাতে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক লক্ষ টাকা তিন মাসের মধ্যে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। আদালতের মন্তব্য, ওই টাকা দিতে না পারলে আরও ৯০ দিন জেল খাটতে হবে যুবককে। সরকারি আইনজীবী পার্থপ্রতিম কার্জি জানান, ঘটনার গুরুত্ব থাকায় বিভিন্ন আদালত ওই যুবকের জামিন একাধিকবার খারিজ করে দেয়। ফলে হাজতে রেখেই চলে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া। তিনি জানান, ঘটনার পর জখম ওই তরুণীর দু'টি গালে মোট ২৪টি সেলাই হয়। পরে তাঁর দুই গালে প্লাসটিক সার্জারিও করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল সন্ধ্যায় দক্ষিণ বন্দর থানার স্ট্যান্ড রোড এলাকায় ওই ঘটনাটি ঘটে। কলকাতা পুলিসের মুখ্য সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রেমের প্রস্তাব খারিজ করায় ওই যুবক নানাভাবে ওই তরুণীকে উত্যক্ত করছিল। শেষে নানাভাবে ভয় দেখানোয় মুচিপাড়া থানা এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণী ঘটনার দিন বাধ্য হয়ে ওই যুবকের সঙ্গে দেখা করতে যান। আর তখনই ওই যুবক আচমকা পকেট থেকে একটি ধারালো অস্ত্র বার করে তরুণীর দুই গালে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণী রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবক চম্পট দেয়। স্থানীয় মানুষজন তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপতালে নিয়ে যায়।
পরে তল্লাশি চালিয়ে পুলিস ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। তদন্ত শেষ করে পুলিস ধৃতের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে চার্জশিট পেশ করে। ঘটনার গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে কলকাতা পুলিসের তরফে কোর্টে আবেদন জানানো হয়, ধৃতের বিচার যেন জেল হেফাজতে রেখে করা হয়। ওই আবেদন মঞ্জুর হয়। তদন্তকারী পুলিস অফিসার কৃষ্ণপদ মণ্ডল জানান, এই মামলায় মোট সাতজন কোর্টে সাক্ষী দেন। দীর্ঘ শুনানির শেষে বিচারক এদিন ওই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে ওই সাজা ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে বিচারক ভরা এজলাসে ওই যুবককে বলেন, আপনি যে কাজ করেছেন, তা এক কথায় ক্ষমার অযোগ্য। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আপনাকে সাজা দেওয়া হল। যদিও ওই যুবক কোর্টে দাবি করে, তাকে অহেতুক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।