কাঁটা উপড়ে ফেলতে প্রেমিকার স্বামীকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা


হাওড়া: প্রেমের কাঁটা উপড়ে ফেলতে এক ব্যক্তিকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে শরীরের প্রায় ২৫টি জায়গায় কোপ মারল স্ত্রীর প্রেমিক। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে লিলুয়ার ঘুঘুপাড়ায়। তপন মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তিকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে বেলুড় জয়সওয়াল হাসপাতাল ও সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তপনবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে রমেশ বাগ নামে স্ত্রীর প্রেমিকের বিরুদ্ধে লিলুয়া থানায় অভিযাগ দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে, গুরুতর জখম তপনবাবুকে জয়সওয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য লিফটে চাপানো হলে মাঝপথে তা আটকে যায়। প্রায় আধঘণ্টা তিনি সেখানেই আটকে থাকেন। পরে লিফট মেরামত করে তাঁকে নামানো হয়। তপনবাবুর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়ে যাওয়ায় অনেকখানি রক্তক্ষরণ হয়। তাতে অবস্থার অবনতি হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কীভাবে এই লিফটের গোলমাল হল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় কেউ দোষী প্রমাণিত হলে, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিস ও স্থানীয় সূত্রের খবর, লিলুয়ার ঘুঘুপাড়ায় বেশ কিছুদিন ধরে থাকতেন তপনবাবু ও তাঁর স্ত্রী। প্রতিবেশী হওয়ায় ওই বাড়িতে মাঝেমধ্যে আসত রমেশ বাগ নামে এক ব্যক্তি। রমেশের সঙ্গে ধীরে ধীরে তপনবাবুর স্ত্রী রূপাদেবীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন আগে রূপাদেবীকে নিয়ে রমেশ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে রূপাদেবী ফিরে আসেন। তখন থেকে তপনবাবুর সঙ্গে রমেশের গোলমাল শুরু হয়। এই নিয়ে বাড়িতেও চরম অশান্তি হত। মঙ্গলবার রাতে ওই বাড়িতে রমেশ ফের আসে। তার সঙ্গে তার এক বন্ধু লাল্টুও আসে। তখন তপনবাবুর সঙ্গে রমেশের চূড়ান্ত বচসা শুরু হয়। তারপরই তপনবাবুর উপর রমেশ চড়াও হয় ও শরীরের প্রায় ২৫টি জায়গায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ মারে। এরপরই রমেশ ও তার বন্ধু পালিয়ে যায়।

এদিকে, তপনবাবুর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বেলুড় জয়সওয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ইমার্জেন্সিতে দেখানোর পর ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য লিফটে তোলা হয়। কিন্তু, মাঝপথে লিফট খারাপ হয়ে যায়। এরপর মিস্ত্রি ডেকে লিফট মেরামত করে প্রায় আধ ঘণ্টা পর তাঁকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে, তপনবাবুর পরিবারের লোকজন এই নিয়ে রাতেই লিলুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই নিয়ে তপনবাবুর স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলা হবে।