সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫এ বাতিলের মামলার শুনানি আজ, উত্তাল কাশ্মীর


শুক্রবার মামলটির শুনানি স্থগিতের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাজ্য সরকার। তাদের ‌যুক্তি, রাজ্যের পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। এই অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে


কোনও মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ নয়, সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদ বাতিল মামলার শুনানির আগে উত্তাল কাশ্মীর উপত্যকা। আজ ওই মামলা উঠছে সুপ্রিম কোর্টে। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরাল ‌যে মামলার শুনানি স্থগিত রাখার আবেদন করেছেন রাজ্যপাল এনএন ভোরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদ বাতিল করার দাবিতে ‌যে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে তা বাতিল করতে হবে।

সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদ অনু‌যায়ী বিশেষ কিছু সুবিধা পেয়ে থাকেন কাশ্মীরের মানুষ। সেইসব সুবিধা বাতিলের দাবি করে ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করে উই দ্যা সিটিজেন্স নামে ভিএইপি ঘেঁসা একটি সংগঠন। সেই মামলারই শুনানি হবে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের একটি বেঞ্চে। অন্য দুই বিচারপতি হলেন এ এম খানওয়ালিকর ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।

কী রয়েছে অনুচ্ছেদ ৩৫এ-তে? এই অনুচ্ছেদ রাজ্যের বাইরের কোনও লোক জম্মু ও কাশ্মীরের কোনও সম্পত্তি কিনতে পারেন না। পাশপাশি কাশ্মীরের কোনও মহিলা রাজ্যের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে তিনি বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন। ১৯৫৪ সালে এই অনুচ্ছেদটি সংবিধানে অর্ন্তভুক্ত করা হয়।

এই অনুচ্ছেদের সমর্থনে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে ন্যাশনাল কন্ফারেন্স ও সিপিএম। এছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য দল ও সংগঠন এনিয়ে রাস্তায় নেমেছে। রবিবার এনিয়ে বনধ ডেকে দেয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ফলে সারদিন উপত্যকা ছিল শুনসান। দোকান বাজার বন্ধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এদিন খোলেনি।

শুক্রবার মামলটির শুনানি স্থগিতের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাজ্য সরকার। তাদের ‌যুক্তি, রাজ্যের পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। এই অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। মামলা বাতিলের দাবিতে রবিবার রাজ্যে মিছিল বের করে ন্যাশন্যাল কন্ফারেন্স ও পিডিপি। ইতিমধ্যেই অনুচ্ছেদ ৩৫এ বাতিল হলে কী ক্ষতি হবে তা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।

পিডিপি নেতা রফি আহমেদ মীর এই অনুচ্ছেদ বাতিলের দাবির তীব্র বিরোধিতা করেছেন। সংবাদ মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতে অর্ন্তভুক্তির শর্তের মধ্যেই ছিল অনুচ্ছেদ ৩৫এ। এখন এই অনুচ্ছেদ বাতিল হলে তার পরিনাম ভালো হবে না। কাশ্মীরের তরুণ প্রজন্ম এমনিতেই মূলধারার রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছে। এবার এই অনুচ্ছেদ বাতিল হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।

উল্লেখ্য, গত মে মাসে এই মামলার শুনানি স্থগিত করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের ‌যক্তি ছিল, মধ্যস্থতাকারী দীনেশ শর্মা বিষয়টি নিয়ে কোনও রাস্তা দেখাতে পারেন কিনা তা দেখা।