সরকারি শিক্ষক পদে চাকরি পেয়েও নিলেন না চাকরিপ্রার্থীরা, অনীহার পিছনে উঠে এল চমকে দেওয়া তথ্য


কলকাতারি চাকরি পেয়েও নিতে চাইছেন না! এসএসসি-র মাধ্যমে একাদশ-দ্বাদশ স্তরের প্রথম পর্যায়ের নিয়োগ শেষে পাওয়া গেল এমনই তথ্য। মেধাতালিকায় নাম থাকলেও এলেনই না ২৬০ জন । প্রশ্ন উঠছে, এসএসসি-র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সময় বেশি লাগাতেই কি মুখ ফেরাচ্ছেন চাকরি প্রার্থীরা?

বারবার আইনি জট। কোনওবার কমিশনের ব্যর্থতা। কখনও শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় কর্মরত শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে জটিলতা। যাঁকে ঘিরেই দু'বছর ধরে চলল এসএসসির মাধ্যমে একাদশ দ্বাদশের নিয়োগ প্রক্রিয়া। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু ও শেষের মধ্যে লাগল লম্বা সময়।

- ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ একাদশ-দ্বাদশ স্তরের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন

- পরীক্ষার পর ফলপ্রকাশ হয় ২৭ নভেম্বর, ২০১৭

- নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাউন্সেলিং শুরু চলতি বছরের জুলাইতে

- অর্থাৎ গোটা প্রক্রিয়ায় প্রায় ২ বছর

দীর্ঘমেয়াদী এই প্রক্রিয়ায় বিরক্ত হয়ে এসএসসির মাধ্যমে শিক্ষকের চাকরিতে অনীহা ধরেছে প্রার্থীদের। সম্প্রতি, একাদশ-দ্বাদশের প্রথম পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরিসংখ্যান বলছে, মেধাতালিকায় নাম থাকলেও চাকরি নিতে আসেননি অনেকেই।

- একাদশ ও দ্বাদশ স্তরের শিক্ষক নিয়োগের শূন্যপদ ছিল প্রায় ৫,২০০

- প্রথম পর্যায়ে কাউন্সেলিংয়ের জন্য ৪,১৯৬ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ

- এঁদের মধ্যে ১৮৫ জন কর্মরত শিক্ষক চাকরি নিয়েছেন

- কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে চাকরি নিতে আসেননি ১৩৭ জন

- কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে ৮৪ জন চাকরি নিয়েও প্রত্যাখ্যান করেছেন

- চাকরি পেয়েও নিতে আসেননি ২৬০ জন

স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান শর্মিলা মিত্রও মানছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়াতেই শিক্ষকের চাকরিতে অনীহা ধরেছে প্রার্থীদের। ইতিমধ্যেই অন্য সরকারি চাকরি পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। তিনি বলেন, 'অনুপস্থিত থাকার অনেক কারণ হতে পারে ৷ দেরির কারণকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না ৷ প্রার্থীরা চাকরি নেবেন কিনা জানানো উচিত ৷'

শূন্যপদ পূরণের জন্য তাই কমিশনের সিদ্ধান্ত,

- যাঁরা কাউন্সেলিংয়ে আসেননি, তাঁদের ফের সুযোগ দেওয়া হবে

- আগে এলে আগে সুযোগ

- ১৭ অগাস্টের মধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে চিঠি

- এরপরেও শূন্যপদ পূরণ না হলে ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগ

- এখনও ৫ হাজার ৪৬ জনের ওয়েটিং লিস্ট

- প্রক্রিয়া শুরু হবে সেপ্টেম্বরের শেষে

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সরকারি চাকরি না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ বিস্তর, সেখানে চাকরি পেয়েও ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসায় বিস্মিত সকলে ৷

তাহলে এত আন্দোলন চললেও পরিসংখ্যান কমিশনের ব্যর্থতার জন্য নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কারণ? খুঁজছে কমিশন। যদিও কমিশনের আশা, ওয়েটিং লিস্টের মাধ্যমে পূরণ হয়ে যাবে বাকি শূন্যপদ।