খাস কলকাতায় ভেজাল গুঁড়ো দুধের রমরমা কারবার, ইবি-র অভিযানে পর্দাফাঁস


দরকার অ্যারারুট, চিনি আর কিছু রাসায়নিক। নির্দিষ্ট পরিমাণে মিশিয়ে দিলেই তৈরি হয়ে গেল গুঁড়ো দুধ। তারপর নামী সংস্থার মোড়কে প্যাকেটবন্দি করে বাজারে ছাড়লেই কেল্লা ফতে। নামী সংস্থার দামেই দেদার বিক্রি হয়ে যাবে ভেজাল গুঁড়ো দুধ। সামান্য খরচেই পকেটে ঢুকবে লাখ লাখ টাকা।

খাস কলকাতার বুকে এমনই ভেজাল গুঁড়ো দুধের রমরমা কারবারের পর্দাফাঁস করল কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। বড়বাজার এলাকায় হানা দিয়ে এই জাল গুঁড়ো দুধের ওই কারখানা সিল করে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার সৌম্যদীপ কুণ্ডু নামে এক ব্যবসায়ী। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা চক্রের জাল গোটানোর চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বড়বাজারের ওই ভেজাল গুঁড়ো দুধের কারখানা সম্পর্কে গোপন সূত্রে খবর পান এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের গোয়েন্দারা। সেই খবর প্রাথমিক ভাবে যাচাই করার পর অভিযানের প্রস্তুতি চলে। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে চূড়ান্ত অভিযানে নামেন গোয়েন্দারা।

কিন্তু কারখানায় ঢুকে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ দুঁদে গোয়েন্দাদেরও। চার দিকে গুঁড়ো দুধ তৈরির সরঞ্জাম, রয়েছে রাসায়নিকের প্যাকেট। এ ছাড়াও কারখানায় মিলেছে প্রচুর প্লাস্টিকের কৌটো, টিন এবং সব সামগ্রী মেশানোর বড় বড় পাত্র। বস্তাবন্দি বিপুল পরিমাণ ভেজাল গুঁড়ো দুধও উদ্ধার হয়েছে কারখানা থেকে। সেখানেই গ্রেফতার ব্যবসায়ী সৌম্যদীপ কুণ্ডু। বাজেয়াপ্ত করা হয় ওই সব সরঞ্জাম এবং ভেজাল গুঁড়ো দুধ।

এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই কম বিনিয়োগে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনের এই চক্র চলছিল। এমনকি, ভিন রাজ্যেও এখান থেকে গুঁড়ো দুধ যেত বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এই কারবারের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃতকে জেরা করে আরও তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।

ভেজাল তরল দুধ, ঘি থেকে নানা সামগ্রীতে ভেজালের খবর উঠে আসে মাঝেধ্যেই। কিন্তু শহর কলকাতায় এ ভাবে ভেজাল গুঁড়ো দুধের কারবার নজিরবিহীন। চা-কফি, দই, মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহারের পাশাপাশি শিশুদেরও খাওয়ানো হয় গুঁড়ো দুধ। স্বাভাবিক ভাবেই সেই গুঁড়ো দুধেও এ ভাবে ভেজালের খবরে শিউরে উঠেছেন অনেকেই।