১১০ ফুট গর্ত থেকে ৩০ ঘণ্টায় উদ্ধার শিশু


দাদুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে খেলতে খেলতে প্রায় ১১০ ফুট গভীর গর্তে পড়ে গিয়েছিল তিন বছরের মেয়ে সানা। ৩০ ঘণ্টা লড়াইয়ের পরে বিহারে মুঙ্গেরের মুর্গিয়াচকে গর্ত থেকে সানাকে উদ্ধার করল এনডিআরএফ এবং পুলিশের যৌথ দল। তাকে মুঙ্গেরের সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত কাল বিকেল তিনটে নাগাদ গভীর নলকূপের জন্য খোঁড়া ওই গর্তে পড়ে যায় সানা। বাড়ির লোকজন ও পড়শিরা তোলার চেষ্টা শুরু করেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে রাতে খবর দেন থানায়। পুলিশ ও দমকল বাহিনী গিয়েও মেয়েটিকে তুলতে পারেনি।  রাতেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এনডিআরএফ) ঘটনাস্থলে যায়।

এনডিআরএফের উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, প্রায় ৪৫ ফুট গভীরে আটকে ছিল সানা। যাতে সে আরও গভীরে না চলে যায় সে জন্য প্রথমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গর্তে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং অক্সিজেনের ব্যবস্থাও করা হয়। দেওয়া হয় আলোও। প্রায় ২০ ঘণ্টা পরে সানার আওয়াজ শুনতে পান পরিবারের লোকজন। এর পরে যে গর্তে সানা পড়েছে তার পাশেই একটি গর্ত খোঁড়ে এনডিআরএফ। সেই গর্ত দিয়েই তাকে উদ্ধার করা হয়। মাটিতে মাখামাখি অবস্থায় সানাকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা হন উদ্ধারকারীরা। পথে চোখ খুলে সানা আশপাশের মানুষকে দেখছিল বলে জানিয়েছেন তাঁরা। মুঙ্গেরের হাসপাতাল সূত্রে খবর, কয়েকটি বিস্কুট খেয়েছে। সুস্থই আছে সানা।

সপ্তাহখানেক আগে মা সুধাদেবীর সঙ্গে মামার বাড়িতে এসেছিল সানা। বাবা নচিকেতা প্রসাদ ব্যাঙ্ককর্মী।  দাদু উমেশনন্দন প্রসাদের বাড়িতে গত তিন দিন ধরে গভীর নলকূপ বসানোর কাজ চলছিল। এ বছর বৃষ্টি ভাল না হওয়ায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। সে কারণে বাড়িতে গভীর নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্ত নেন উমেশনন্দন। গভীর নলকূপের পুজোর জন্যই সুধাদেবী তাঁর বাবার কাছে আসেন। গভীর নলকূপ বসানোর জন্য প্রায় ২২৫ ফুট গভীর গর্ত খোঁড়া হয়। তার মধ্যে ১১৫ ফুট বুজিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাকিটা বুজিয়ে দেওয়ার কাজ চলছিল। এরই মধ্যে সেই গর্তে পড়ে যায় সানা।

২০০৬ সালে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যায় প্রিন্স নামে এক বালক। অনেক চেষ্টার পরে তাকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। পরিত্যক্ত গর্তের মুখ বন্ধ করতে নির্দেশও রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু মুঙ্গেরে এই বিপত্তি কাজ
চলার ফাঁকেই, সতর্কতার অভাবে।