শিশুর গলায় কয়েন আটকে বিপত্তি! ৪ সরকারি হাসপাতাল হয়ে চিকিৎসা এসএসকেএম-এ


চার বছরের শিশুর গলায় একটাকার কয়েন আটকে বিপত্তি। নদিয়ার রানাঘাটের গাংনাপুর থেকে কলকাতা একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে অবশেষে রবিবার ভোর নাগাদ সফল অস্ত্রোপচার করেন এসএসকেএম-এর চিকিৎসকরা। শিশুটি এখন বিপদমুক্ত বলে জানা গিয়েছে।

বছর চারেকের অর্ঘ্য বিশ্বাস নদিয়ার রানাঘাটের গাংনাপুরের বাসিন্দা। মা মারা গিয়েছেন। বাবা কাজ করেন বাইরে। ফলে সে দাদু-দিদার কাছেই থাকে। শনিবার সকালে খেলতে খেলতে একটি একটাকার কয়েন শিশুটির গলায় আটকে যায়। শিশুটির দিদা ফোন করে দাদুকে বাড়িতে ডাকেন। এর পরের একটানা প্রায় আঠারো ঘন্টা ধরে চলে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘোরাঘুরি।
 
সাত জায়গায় ঘুরে চিকিৎসা হল এসএসকেএম-এ

১)  শিশুটিকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তার এক্সরে করা হয়। পরিবারের দাবি, একইসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, পরিকাঠামো না থাকায় সেখানে এর কোনও চিকিৎসা হবে না।

২)  এরপর শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় চাকদার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

৩)  সেখান থেকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। পরিবারের দাবি, সেখান থেকে এর কোনও পরিকাঠামো না থাকায় চিকিৎসা হবে না জানিয়ে রেফার করে দেওয়া হয় এনআরএস হাসপাতালে।

শিশুটির দাদু-দিদা তড়িঘড়ি কল্যাণী থেকে শিয়ালদহের ট্রেন ধরেন শনিবার বিকেল নাগাদ। ট্রেনেই পরিচয় হয় রাসবিহারীর বাসিন্দা তুলিকা গাঙ্গুলির সঙ্গে। তিনি ফোন নম্বর দিয়ে সাহায্যের আশ্বাস দেন।

৪)  শিশুটিকে নিয়ে এনআরএস হাসপাতালে পৌঁছলে সেখানে তার আরও একবার এক্সরে করা হয়। চিকিৎসক নেই জানিয়ে অপেক্ষা করতে বলা হয়। শিশুটির দিদা জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে বলা হয় রবিবার সকালের আগে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়।

৫)  শিশুটিকে এরপর নিয়ে যাওয়া হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, সেখানে ভর্তি নেওয়ার কথা জানিয়ে বলে দেওয়া হয় রাতে কোনও কিছু সম্ভব নয়। যা হবে রবিবার সকালে।

৬)  এই সময় ট্রেনে পরিচয় হওয়া মহিলাকে ফোন করেন শিশুটির দিদা। তিনি শিশুটিকে শিশুমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে রাতে এই চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি, শিশুটির পরিবারের।

৭)  শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম-এ। খবর পেয়ে পৌঁছে যায় সংবাদমাধ্যমও। ভর্তি নেওয়া হলেও, প্রথমে চিকিৎসা শুরু করা হয়নি বলে অভিযোগ শিশুটির পরিবারের। যদিও পরে চিকিৎসকরা রাতেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। ভোররাতে শিশুটির অস্ত্রোপচার করা হয়। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে বলে জানা গিয়েছে।