বিয়ের মাত্র ছ’মাসের মাথায় ‘আত্মঘাতী’ দম্পতি


বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে এক দম্পতির। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে, দক্ষিণ শহরতলির বারুইপুর থানার পূর্ব বৃন্দাখালি এলাকায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মাস ছ'য়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের বাসিন্দা মৌসুমী সর্দারের (২৩) সঙ্গে বিয়ে হয় পূর্ব বৃন্দাখালির বাসিন্দা, পেশায় মৎস্যজীবী সুজন সর্দারের (২৭)। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই সুজনের সঙ্গে মৌসুমীর বনিবনা হচ্ছিল না। গত ছ'মাসে একাধিক বার মৌসুমী বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। পরে সুজন তাঁকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে নিয়ে আসতেন। বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে দু'জনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয় বলে জানিয়েছেন পড়শিরা। তার পরে দু'জনই বাড়িতে রাখা কীটনাশক খেয়ে নেন বলে অভিযোগ। ঝগড়ার আওয়াজ শুনতে পেয়ে সুজনের দাদা ও ভাইয়েরাও ছুটে এসেছিলেন তাঁদের ঘরে। তাঁরা সকলে চলে যাওয়ার পরেই ওই দম্পতি বিষ খান বলে অভিযোগ।

বিষ খাওয়ার পরে দু'জনেই বমি করতে থাকেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁদের বারুইপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার দু'জনেই মারা যান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অনেকটা বিষ খেয়ে নেওয়ায় তা শরীরের নানা জায়গায় ছড়িয়ে গিয়েছিল। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও দু'জনকে বাঁচানো যায়নি। এক তদন্তকারীর কথায়, দুই পরিবারের লোকজনকে ডাকা হয়েছে। কী কারণে দু'জনের মধ্যে ঝগড়া হত, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সুজনের দাদা তাপস সর্দার বলেন, ''কী কারণে ঝগড়া হত, সে বিষয়ে আমরা কিছু জানতাম না। আমাদের কোনও কিছুই বলত না ওরা।'' মৌসুমীর দিদি মানসী বলেন, ''সপ্তাহখানেক আগে বোন আমার কাছে এসেছিল। কয়েক দিন ছিল। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে কোনও ঝগড়ার বিষয়ে আলোচনা করেনি। বেশ হাসিখুশিই ছিল। পরে সুজন এসে বোনকে নিয়ে যায়।''

এক তদন্তকারী জানান, সুজন ও মৌসুমীর সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের কারও বিবাহ-বহির্ভূত কোনও সম্পর্ক ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। দুই পরিবারের লোকজনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ঝগড়ার সময়ে উত্তেজনার বশেই ওই দম্পতি একসঙ্গে বিষ খেয়ে ফেলেন। তবে দুই পরিবারের তরফে কেউই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেননি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।