পাঁচ মাসের বাচ্চার পেটে তিন মাসের ভ্রুণ


বারাকপুর: সদ্যোজাতের পেটের ভিতরে আরও একটি বাচ্চা। এমনই বিরলতম ঘটনার সাক্ষী থাকলেন কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এক প্রসূতি ডেলিভারি করার পর পাঁচ মাসের সদ্যোজাতের পেট কেটে তিন মাসের আরও একটি বাচ্চার ভ্রূণ মেলে। সদ্যোজাতের পেটে আরও একটি বাচ্চা জন্মানোর ঘটনাটি নিয়ে হাসপাতাল জুড়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে । চিকিৎসকদের দাবি, পাঁচ লক্ষ বাচ্চার মধ্যে একটিতে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। যদিও হাসপাতালে ডেলিভারি হওয়ার পর ওই প্রসূতি সুস্থ রয়েছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার নদীয়ার তাহেরপুর এলাকার এক প্রসূতি হাসপাতালে দেখাতে আসেন। বাইরে থেকে ইউএসজি রিপোর্ট করে দেখেন, তাঁর পেটের পাঁচ মাসের যে সন্তান রয়েছে, তার মধ্যেও আরও একটি বাচ্চা রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা ইউএসজি রিপোর্ট দেখে হতবাক হয়ে যান। এরপর তাঁরা হাসপাতালের মধ্যে ফের ইউএসজি করেন। সেখানেও একই রিপোর্ট পান। এরপর পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানানো হয়। কারণ, এই ধরনের শিশু পেটের মধ্যে বাড়তে দিলে দুটি শিশুর মৃত্যু ঘটবে। পাশাপাশি প্রসূতির মৃত্যুর সম্ভাবনাও রয়েছে। ফলে, চিকিৎসকরা ডেলিভারি করার পরামর্শ দেন। পরে, হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর অভিজিৎ হালদারের অধীনে ওই প্রসূতি হাসপাতালে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার হাসপাতালেই ওই চিকিৎসক তাঁর নর্মাল ডেলিভারি করেন। শুক্রবার মৃত সদ্যোজাতকে নিয়ে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করেন। তাতে দেখা যায়, তার পেটের ভিতরে আরও একটি বাচ্চা রয়েছে।

চিকিৎসক অভিজিৎবাবু বলেন, আসলে এই ধরনের ঘটনা বিরল। ইউএসজি রিপোর্ট দেখেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ওই প্রসূতির পেটে পাঁচ মাসের কন্যা সন্তান ছিল। তার পেটের মধ্যেই আরও একটি তিন মাসের বাচ্চা জন্ম নিয়েছিল। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে 'ফিটাস ইন ফিটো' বলা হয়। ডেলিভারি করার পর আমি নিজে সদ্যোজাতের পেট কেটে ভিতরে বাচ্চার গঠন দেখেছি। আসলে তিন মাসের ভ্রূণ ছিল। মাথা, পা, স্পাইনাল সব কিছু তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পেটের ভিতরে দুজনেই এক সঙ্গে বাড়ত। কিন্তু, বাঁচার সম্ভবনা ছিল না। পরিবারের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরই আমরা মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে ওই প্রসূতির ডেলিভারি করার সিদ্ধান্ত নিই। এখন ওই প্রসূতি সুস্থ রয়েছেন। তবে, হাসপাতালে একটা বিরলতম ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইলাম।