মেট্রো রেলে আত্মহত্যা ঠেকাতে বসছে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিনগেট


লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ঠেকাতে বসল দরজা। দরজার নাম, '‌‌প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর‌'‌। যখন ট্রেনের দরজা খুলবে একমাত্র তখনই এটি খুলবে। ট্রেনের দরজা এবং প্ল্যাটফর্মের দরজা একইসঙ্গে বন্ধ হবে। ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোতে  এই দরজা বসানোর কাজ শুরু হয়ে গেল।

বুধবার করুনাময়ী স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, দু'‌দিকের প্ল্যাটফর্মেই কাচের লম্বা দেওয়াল। সেই দেওয়ালের মাঝে মাঝে দরজা। ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর রোলিং স্টক ডিরেক্টর অনুপকুমার কুণ্ডু জানালেন, '‌প্রতিটি দরজাই অগ্নিনিরোধক। সব কটি দরজার সঙ্গে একটা করে আপৎকালীন দরজা থাকবে। যদি প্ল্যাটফর্মের দরজা না খোলে তবে এই দরজা দিয়ে বেরোনো যাবে।'‌ দরজা তৈরিতে বিশেষ রকমের কাচ ব্যবহার করা হয়েছে। ঝঁুকি এড়াতে প্ল্যাটফর্মের সামনে এবং পেছনের দিকেও দরজা থাকবে। যাতে কেউ লাইনে না নামতে পারেন। একমাত্র মেট্রো কর্মীরাই এই দরজা খুলতে পারবেন। 

আপৎকালীন দরজা খুলতে পারবেন শুধুমাত্র ট্রেনের যাত্রীরাই। প্ল্যাটফর্ম থেকে এটি খুলতে পারবেন মেট্রো কর্মীরা। ট্রেনে থাকবে ছ'‌টি কোচ এবং ২৪টি দরজা। প্ল্যাটফর্মেও ২৪টি দরজা থাকবে।

১৯৮৪ সালে কলকাতায় মেট্রো রেল চালু হওয়ার পর থেকেই মেট্রোর লাইনে বার বার আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। মেট্রো সূত্রে জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত ৩২৫ বার আত্মহত্যার চেষ্টা হয়েছে। যার মধ্যে মারা গেছেন ১৬০ জন। উদ্ধার করা গেছে ১৬৫ জনকে। দুর্ঘটনা এড়াতেই নতুন মেট্রোতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর যাত্রাপথে ছ'‌টি স্টেশন থাকবে মাটির ওপর। এই স্টেশনগুলিতে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোরের উচ্চতা ১.‌৭ মিটার, চওড়া ২ মিটার। গাড়ির দরজার থেকে এই দরজা বেশি চওড়া। গাড়ি এগিয়ে বা পিছিয়ে গেলে যাতে ট্রেন থেকে নামতে কোনও সমস্যা না হয় সে কারণেই অতিরিক্তি চওড়া করা হয়েছে। প্রতিটি স্টেশনে এই ব্যবস্থার জন্য গড়ে ৫ কোটি টাকা খরচ হবে। মাটির নিচের প্ল্যাটফর্মের দরজার উচ্চতা ২.‌৬৫ মিটার। যার নাম '‌প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর'।‌

উচ্চতায় স্টেশনের ছাদ পর্যন্ত। প্রত্যেকটি স্টেশনের দরজা এবং গাড়ির দরজার সঙ্গে থাকবে একটি সিগন্যাল। খোলা এবং বন্ধ হওয়া পর্যন্ত আওয়াজ হবে।

কলকাতা মেট্রোতে ট্রেনের দরজা বন্ধ না হলেও ট্রেন ছুটে যাওয়ার বেশ কয়েকবার অভিযোগ উঠেছে। অনুপকুমার কুণ্ডু জানিয়েছেন, গাড়ি বা প্ল্যাটফর্মের দুটো দরজা যদি বন্ধ না হয় তবে এই মেট্রো চলবে না।

করুণাময়ীর সঙ্গে সেন্ট্রাল পার্ক স্টেশনেও এই দরজা বসানোর কাজ চলছে।