ছেলেকে বেঁধে রেখে বেরিয়েছিলেন মা, আগুনে পুড়ে মৃত ছেলে।


ঢাকা: মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। প্রায়ই গায়ের জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে ছেলে। মাঝে মাঝেই হিংস্র হয়ে উঠে সে। ফলে বাধ্য হয়ে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন মা। তারপর অভাবী সংসারে দু'মুঠো অন্ন জোগাতে ভিক্ষা করতে বেরিয়ে যান মা। এমনটাই চলছিল জীবন। রবিবারও এমনি ছেলেকে বেঁধে রেখে ভিক্ষেয় বেরিয়েছিলেন মা। তখনই বস্তিতে আগুন লাগে। ঝুপড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে না পেরে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যায় বছর তিরিশের রবিউল।

ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের বন্দরশহর চট্টগ্রামে। রবিবার সকালে আগুন লাগে শহরের চাঁদগাঁও বস্তিতে। এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দারাই অত্যন্ত দরিদ্র। ভিক্ষা করে বা দিন মজুরের কাজ করেই দিন গুজরান হয় তাঁদের। প্লাস্টিক ও টিনের ঝুপড়িগুলিতেই কোনও মতে মাথা গুঁজে থাকে পরিবারগুলি। ওই বস্তিরই বাসিন্দা ফাতেমা ও তাঁর ছেলে রবিউল। ভিক্ষা করে সংসারে অন্ন জোগান ফাতেমা। বছর তিরিশের রবিউল মানসিক ভারসাম্যহীন। অন্য দিনের মতোই ছেলেকে ঝুপড়িতে বেঁধে রেখে ভিক্ষা করতে বেরিয়েছিলেন ফাতেমা। তখনই ভয়াবহ আগুন লাগে বস্তিতে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় অন্তত ৩০টি ঝুপড়ি। অনেকেই সময়মতো বেরিয়ে আসতে পারলেও, বাঁধা থাকায় বেরিয়ে আসতে পারেননি রবিউল। ফলে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার।

দমকল বাহিনীর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কামালউদ্দিন জানান, রবিবার সকাল ১০ টার দিকে চাঁদগাঁও থানার উত্তর ফরিদারপাড়ার ওই বস্তিতে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঝুপড়িগুলিতে দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর রবিউলের মৃতদেহ উদ্ধার করেন দমকলকর্মীরা। ছেলের এহেন পরিণতিতে কার্যত বাক্যহীন মা ফাতেমা। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন তিনি। ছেলের মৃত্যুর জন্য নিজেকেই দায়ি করছেন তিনি।     


Highlights
পুড়ে ছাই হয়ে যায় অন্তত ৩০টি ঝুপড়ি।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পড় রবিউলের মৃতদেহ উদ্ধার করেন দমকলকর্মীরা।
ছেলের মৃত্যুর জন্য নিজেকেই দায়ি করছেন তিনি।