ডোনার না পেলে নিজেই ভিকি..... না জানিয়ে রোগীদের নিজের স্পার্ম, জেল চিকিৎসকের


ভিকি ডোনার ছবিতে চিকিৎসক অন্নু কপূরের সহায় ছিলেন ভিকি ডোনার। ছবির শেষ ভাগে বারান্দা থেকে নীচের লনে হেঁটে চলে বেড়ানো গুণতিহীন সন্তানকে দেখে ভিকি ডোনারের অভিব্যক্তি মনে আছে দর্শকদের। কিন্তু যাঁরা ভিকির মতো কাউকে পান না? তাঁরা কি আমেরিকার ইন্ডিয়ানার ফার্টিলিটি চিকিৎসকের মতো কাজ করেন?

কী করেছিলেন তিনি?
মহিলাদের না জানিয়ে নিজের বীর্য (স্পার্ম) দান করতেন। আর তার জেরেই শ্রীঘরে যেতে হল ওই চিকিৎসককে। বৃহস্পতিবার প্রতারক বাবাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। সুবিচার চেয়ে বায়োলজিক্যাল বাবার বিরুদ্ধে  আদালতে গিয়েছিলেন সন্তানেরা। তিনি পেশায় একজন ফার্টিলিটি চিকিৎসক। এখনও পর্যন্ত যা তথ্য পেয়েছে পুলিশ, তাতে এমন মোট ২০ জনেরও বায়োলজিক্যাল বাবা ওই চিকিৎসক। তাঁর কনিষ্ঠতম সন্তানের বয়স ৩০ বছর।

পুলিশ সূত্রে খবর, সন্তানলাভের আশা নিয়ে তাঁর ক্লিনিকে যত মহিলা আসতেন, তাঁরা কেউই বিষণ্ণ হয়ে ফিরতেন না। স্পার্মের জন্য উপযুক্ত দাতা পাওয়া না গেলে নিজেই দাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। তবে মহিলাদের অন্ধকারে রেখেই স্পার্ম দান করতেন ওই চিকিৎসক।

এ ভাবেই চলছিল। ফার্টিলিটি চিকিৎসক হিসেবে নামধামের পাশাপাশি সন্তানের সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছিল। কিন্তু বাধ সাধল তাঁরই দুই বায়োলজিক্যাল সন্তান। বেশ কিছু বিষয়ে ওই দুই সন্তানের সন্দেহ হয়। সন্দেহটা নেহাত ভুল ছিল না। তাঁদের ডিএনএ টেস্টে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে ৫০ শতাংশেরও বেশি সাদৃশ্য পাওয়া যায়। এর পরই পুলিশের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।

তদন্তে জানা যায়, ২০০৯ সালে চিকিৎসা থেকে তিনি অবসর নেন। কিন্তু তার আগে ১৯৭০ সাল থেকে এই 'সমাজসেবা' চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর ক্লিনিকে আসা রোগীদের মোট ৫০ বার নিজের স্পার্ম দিয়েছেন। আর প্রতিটা ক্ষেত্রেই তাঁদের অন্ধকারে রেখেছেন। সন্তানধারণের ইচ্ছায় ক্লিনিকে আসা মহিলাদের ধারণা ছিল, যে স্পার্মে তাঁরা অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন তা কোনও ডাক্তারি পড়ুয়ার। আদপে ঘটত উল্টোটা।

তবে বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ানা আদালত যে রায় দিয়েছে, তা শুধুমাত্র একজন চিকিৎসক হয়ে নিজের স্পার্ম গ্রহীতাদের দেওয়ার জন্য নয়। কারণ, ইন্ডিয়ানার আইনে এটা কোনও অপরাধ নয়। তবে গ্রহীতাদের মিথ্যা বলার জন্য তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁর চিকিৎসার লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে। ওই দিন মামলার শুনানিতে এমন ১০ জন উপস্থিত ছিলেন যাঁদের বায়োলজিক্যাল বাবা ওই চিকিৎসকই। তাঁরা প্রত্যেকেই তাদের মায়ের সঙ্গে কোর্টে এসেছিলেন।

১৯৯৮ সালে ভার্জিনিয়ায় ঠিক এমনই ঘটনা সামনে এসেছিল। সেসিল জেকবসন নামে এক চিকিৎসকও নিজের স্পার্ম দান করে রোগীদের অন্তঃসত্ত্বা করেছিলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে মোট ৭০ জন সন্তানের বায়োলজিক্যাল বাবা হন তিনি।