স্বপ্নাকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার রাজ্যের, দেওয়া হবে চাকরিও

স্বপ্নার মা বসনা দেবী ও মন্ত্রী গৌতম দেব


জলপাইগুড়ি : এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী স্বপ্না বর্মণকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। তাঁকে সরকারি চাকরি দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। আজ স্বপ্নার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি গিয়ে দেখা করেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।

ছোটোবেলা থেকেই লড়াই ছিল অভাবের সঙ্গে, দারিদ্রের সঙ্গে। সেসব পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে স্বপ্না। জলপাইগুড়ির কালিয়াগঞ্জের ঘোষপাড়ার এক রিকশা চালকের সেই লড়াকু মেয়ে আজ দেশের গর্ব। রেকর্ড পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান গেমসে হেপটাথলনে সোনা জিতেছেন জলপাইগুড়ির স্বপ্না বর্মণ। ৬০২৬ পয়েন্ট তুলে স্বপ্না এখন শুধু পদক নয়, বিশ্বরেকর্ডেরও মালিক। এই সোনার মেয়েকে সম্মান জানাতে তাই দেরি করেনি রাজ্য সরকার। ১০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে চাকরির আশ্বাস। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আজ সকালে স্বপ্নার পরিবারকে শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর মাধ্যমেই স্বপ্নার মায়ের সঙ্গে কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। স্বপ্নার বাবা, দুই ভাই সহ পরিবারের সকলের খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বনার মা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমিও কিছু চাইব না, আমার মেয়েও কিছু চাইবে না। আমার মেয়ে সোনা জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। এখন মুখ্যমন্ত্রী ওকে কী দেবেন সেটা ওনাদের বিষয়। আমি কিছু চাইব না।"

স্বপ্নার বাবা পঞ্চানন বর্মণ স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে প্যারালাইজ়ড হয়ে পড়ে রয়েছেন। মা বসনা দেবী চা বাগানে সামান্য মজুরিতে কাজ করেন। আয় বলতে ছেলের মিস্ত্রির কাজ থেকে যেটুকু রোজগার। ভাঙা বেড়ায় ঘেরা টিনের চালের এই অভাবে সংসারে আজ খুশির হাওয়া। শুধু পরিবার নয়, স্বপ্নার জয়ে আবেগে ভাসছে গোটা জেলা। তাই সকাল সকালই স্বপ্নার বাড়িতে পৌঁছে গেছিলেন গৌতম দেব। বলেন, "হেপটাথলন অ্যাথলেটিক্সের সবথেকে কঠিন ইভেন্ট। সেখানে এরকম সংগ্রাম করে অতি নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে সোনা জিতেছে মেয়েটা। দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তার উপর কলকাতায় থেকে পড়াশোনাটাও করছে। এই মেয়ে অনেক দূর যাবে।" পাশাপাশি কিছু পুরানো কথাও শেয়ার করেন মন্ত্রী। 

স্বপ্নার পায়ে ছ'টা আঙুল থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। এক্ষেত্রে যে বিশেষ বুটের প্রয়োজন ছিল তা জোগাড়ের ক্ষমতা ছিল না তাঁর। সেই সময় তাঁকে সাহায্যের উদ্যোগ নিয়েছিলেন গৌতম দেব। সেসব মনে করে বলেন, "আমার মনে আছে আমি ওর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। ওর একটা পায়ে ছ'টা আঙুল। এখন সেসব মনে পড়ছে। ও যে সেই স্বপ্না সেটা ঠিক প্লেস করতে পারছিলাম না। ওর একটা বিশেষ বুটের দরকার ছিল।"