প্রকাশ্যে পশুহত্যা বন্ধ করতে হবে রাজ্য সরকারকে, রায়ে জানাল কলকাতা হাইকোর্ট


বখরি ইদে প্রকাশ্যে পশুহত্যা করা যাবে না। মঙ্গলবার এক রায়ে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, গরুর সঙ্গে ইদ - উল - আজহার পরবের কোনও সম্পর্ক নেই। ইসলামেও গোহত্যা আবশ্যিক নয়। 

এদিন সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিনের রায় মেনে বখরি ইদ উজ্জাপনে সরকারি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারপতিদ্বয়। তাছাড়া প্রকাশ্যে গরু, মহিষ-সহ যে কোনও প্রাণীহত্যা যে নিষিদ্ধ তাও সরকারি নির্দেশনামায় উল্লেখ করতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত। আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, প্রকাশ্যে প্রাণীহত্যা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। 

আশু মোঙ্গিয়া নামে জনৈকের দায়ের করা মামলায় বিচারপতিরা বলেন, ১৯৫০ সালে 'পশ্চিমবঙ্গ পশুহত্যা নিয়ন্ত্রণ আইন' প্রণয়ন হয়েছিল। তার পর ৬৮ বছর কাটলেও কেন উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারেনি সরকার? এই নিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেলকে ভর্তসনাও করেন বিচারপতিরা। বলেন, আইন তৈরির পর পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য কি ৬৮ বছর যথেষ্ট নয়? 

আদালতে পরিকাঠামোর অপ্রতুলতার কথা স্বীকার করে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর গুপ্ত বলেন, 'রাজ্যে পর্যাপ্ত কসাইখানা ও পশুচিকিত্সক নেই। ফলে পরিকাঠামো তৈরির জন্য ১ বছর সময় দেওয়া হোক।' সেই আর্জি মেনে বখরি ইদে প্রকাশ্যে পশুহত্যা বন্ধে সরকারকে ১ বছর সময় দিয়েছে আদালত। 

এই মামলায় গত ১৬ অগাস্ট এক রায়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বখরি ইদে প্রকাশ্যে পশুহত্যা বন্ধ করতে হবে সরকারকে। পশুহত্যায় মানতে হবে পশ্চিমবঙ্গ পশুহত্যা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৫০। এই আইন মোতাবেক রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যে কোনও সময় প্রকাশ্যে পশুহত্যা নিষিদ্ধ। ১৪ বছরের নীচে কোনও পশুকে হত্যা করা যাবে না। পশুহত্যার আগে নিতে হবে সরকারি অনুমতি। কিন্তু পরিকাঠামো না-থাকায় নির্দেশ কার্যকর করতে অক্ষমতার কথা জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল।