তিনমাসের মধ্যে বেআইনি ই-রিকশা বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের


কলকাতা : তিনমাসের মধ্যে রাজ্যের সব বেআইনি ই-রিকশা বন্ধ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ই-রিকশা নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলায় আজ প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কেন নিজেদের তৈরি করা গাইডলাইন নিজেরাই মানছে না রাজ্য ? অবিলম্বে রাজ্যকে নির্দেশিকা তৈরি করতে হবে। গাইডলাইন মেনে না চললে বেআইনি ই রিকশা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ই-রিকশার পুরো বিষয়টাই আইনবহির্ভূত। এই মর্মে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী সহ আরও সাতজন কলকাতা হাইকোর্টে বেশ কয়েকটি জনস্বার্থ মামলা করেন। মামলাকারীদের আইনজীবী নুরুল ইসলাম খান ও সঞ্জীব দত্ত আজ আদালতে জানান, "রাজ্যজুড়ে যত ই-রিকশা চলে তাদের না আছে রেজিস্ট্রেশন না আছে বিমা। ফলে যদি কোনও দুর্ঘটনা হয়, সেক্ষেত্রে ই-রিকশার মালিকের আইনত কোনও দায় থাকছে না। বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনায় এই কারণে মালিকের বিরুদ্ধে কিছুই পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি। 

মামলাকারীদের আইনজীবী আরও বলেন, আইনত চারজনের বেশি ই-রিকশাতে নেওয়া যায় না। কিন্ত, বেআইনিভাবে চারজনের বেশি সংখ্যক লোক নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় দুর্ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু, দুর্ঘটনার দায় সহজেই এড়িয়ে যেতে পারছে মালিক। কারণ ই-রিকশার রেজিস্ট্রেশন, বিমা কিছুই নেই। রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের আইন অনুযায়ী গাইডলাইন ও আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা করেনি।" 

এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী অমল কুমার সেন বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি। বিভিন্ন জেলায় রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সামনে পুজো রয়েছে তাই আরও একটু সময় দেওয়া হোক। এখনই কোনও ব্যবস্থা নিলে জনমানসে সমস্যা তৈরি হতে পারে।

তখন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য পালটা প্রশ্ন করেন, ২০১৫ সালে গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে, তা বলবৎ করতে আর কত সময় নেবেন ? আগামীকাল থেকেই ব্যবস্থা নিন। বেআইনি ই-রিকশা আর একদিনও চলতে দেওয়া যাবে না। দুর্ঘটনা হলে তার দায় কার ? তাহলে সরকার ক্ষতিপূরণ দিক। এরপর সরকারি আইনজীবী বলেন, "ইতিমধ্যে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার ব্যবস্থাও চলছে। মাসছয়েক সময় দিলে ভালো হয়।

সওয়াল-জবাব শেষে প্রধান বিচারপতি বলেন, তিনমাসের মধ্যে বেআইনি ই-রিকশা বন্ধ করতে হবে। ই-রিকশা চালাতে গেলে গাইডলাইন মেনে কাজ করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ও বিমা ছাড়া কোন ই-রিকশা চালানো যাবে না। দুর্ঘটনা হলে তার ক্ষতিপূরণ দেবে ই-রিকশার মালিক। তাকে পাওয়া না গেলে রাজ্য সরকারকে দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। পরবর্তী সময়ে রাজ্য সরকার মালিকের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নেবে।