বিছানা, বালিশ নিয়ে প্রেসিডেন্সির চত্বরেই পড়ুয়ারা


আপাতত ওঁদের ঘর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। গত চার দিন ধরে সেখানেই স্নান, খাওয়াদাওয়া করছেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। এমনকি, রাতে তাঁরা বিছানা-বালিশ নিয়ে ওখানেই ঘুমাচ্ছেন। হস্টেল না পাওয়া পর্যন্ত এ ভাবেই আন্দোলন চলবে বলে সাফ জানিয়ে দিলেন তাঁরা।

তিন বছর হয়ে গেলেও এখন সংস্কার শেষ হয়নি ঐতিহ্যবাহী হিন্দু হস্টেল। মোট তিনটি ব্লক। তার মধ্যে একটি ব্লকের কাজ শেষ হতে এখনও কম করে তিন মাস লাগবে। বাকি দু'টি ব্লকে কবে সংস্কার হবে, কেউ জানেন না। হস্টেলের ভিতরের মাঠ দেখলে আঁতকে ওঠার জোগাড়। আগাছায় ভর্তি। কোথাও বালি পড়ে রয়েছে তো কোথাও ইট-কাঠ-পাথর।

এই অবস্থায় এখনই হিন্দু হস্টেল ছাত্রদের ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালেয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। তিনি বলেন, "হস্টেলের মেরামতির কাজের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতর। তাদের বিষয়টি ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। এখনও কাজ শেষ হয়নি। এর মধ্যে পড়ুয়াদের থাকার ব্যবস্থা করা যাবে না। যত দ্রুত সম্ভব হস্টেল সংস্কারের চেষ্টা চলেছে।"

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এ দিনও পড়ুয়ারা তাঁদের দাবি থেকে সরে আসতে রাজি হননি। সংস্কারের জন্য ২০১৫ সালে খালি করা হয়েছিল শতাব্দী প্রাচীন এই হস্টেল। গত ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সময়ে কাজ শেষ না হওয়াতেই শুক্রবার বেলা ৩টে থেকে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রশাসনিক ভবনে ডিন অব স্টুডেন্ট-সহ অন্য আধিকারিকদের ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। অবস্থান চলছে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের অফিসের সামনেও।
সংস্কারের কারণে পড়ুয়ারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজারহাট হস্টেলে রয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ''সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও সংস্কারের কাজ এগোয়নি। উল্টে উপাচার্য বলছেন, সময় লাগবে।''

সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও সংস্কারের কাজ এগোয়নি।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, হস্টেল এবং প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসের মধ্যে যাতায়াতের জন্য বাসের বন্দোবস্ত আছে। কিন্তু সেই বাস চলে নির্দিষ্ট সময়ে। বেলা ১টায় ক্লাস শেষ হয়ে গেলে হস্টেলে ফেরার জন্য বিকেল ৪টের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ ভাবে সময়ের অপচয় হচ্ছে। তাঁদের দাবি, ''পানীয় জল ও খাবারের ব্যবস্থা আমরা বাইরে কোথাও করে নেব। হস্টেলে থাকার ব্যবস্থাটুকু আগে করা হোক।''

সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় সম্প্রতি ১৪ জনের একটি কমিটি গঠন করেছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হস্টেল ফিরে পেতে শুক্রবার রাজারহাটের হস্টেলের আবাসিকরা বিছানা-বালিশ নিয়ে এখন আন্দোলনে সামিল হয়েছেন।