হাসিনের খোরপোশ আর্জি খারিজ, আদালতের রায় শামির পক্ষে


আদালতের নির্দেশে জোর ধাক্কা খেলেন হাসিন।

ভারতীয় দলের ক্রিকেটার মহম্মদ শামির স্ত্রী হাসিন জাহানের খোরপোশের আবেদন নাকচ করলেন বিচারক। আদালত সূত্রের খবর, প্রতি মাসে সাত লক্ষ টাকা খোরপোশের দাবি জানিয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন হাসিন। যার পুরোটাই নাকচ হয়েছে।
তিন বছর বয়সী মেয়ের পড়াশোনা ও অন্যান্য খরচের জন্য আরও তিন লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন হাসিন। আদালতের নির্দেশে এই টাকার তিন ভাগের একভাগও পাবেন না তিনি।
বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতের তিন নম্বর বিচারবিভাগীয় বিচারক নেহা শর্মা হাসিনের মাসে সাত লক্ষ টাকা খোরপোশের আবেদন খারিজ করেন। তবে মেয়ের পড়াশোনা ও অন্যান্য খরচ বাবদ মাসিক ৮০ হাজার টাকা শামিকে দিতে হবে। প্রত্যেক মাসের ১০ তারিখের মধ্যে এই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মহম্মদ শামির আইনজীবী সেলিম রহমান বলেন, ''আমার মক্কেল মেয়ের খরচ দেবেন, এটা আগেই আদালতকে জানিয়েছিলাম। আদালতে তা মঞ্জুরও হয়েছে। শামি যে সিনেমায়  অভিনয় করছে ও মডেলিংয়ের দুনিয়ায় ফিরে গিয়েছে,তার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।''

সুখের সেদিন। সস্ত্রীক শামি। ফাইল ছবি।
প্রসঙ্গত, হাসিন যেহেতু ফের মডেলিং শুরু করেছেন, তাই তাঁকে খোরপোশ দেওয়াতে আপত্তি জানানো হয়েছে শামির তরফে। তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, হাসিন এখন নিজেই উপার্জন করছেন। তাই শামির কাছে খোরপোশের কোনও প্রয়োজন হাসিনের নেই। যুক্তি দেখানো হয় ষে শুধু মডেলিং নয়, হাসিন অভিনয়ের জগতেও পা রেখেছেন। বলিউডের একটি সিনেমাতেও দেখা যাবে তাঁকে।

হাসিনের আইনজীবী জাকির হোসেন পালটা যুক্তি দেন যে এখনও পাকাপাকি কোনও কাজ তিনি পাননি। বরং তিনি রয়েছেন কাজের খোঁজে। তাই এখনই খোরপোশ বন্ধ হলে সমস্যা হবে। কিন্তু, আদালত তাতে কর্ণপাত করেনি। হাসিনের খোরপোশ পুরো বন্ধ করা হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে ফের আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছেন হাসিন।

প্রসঙ্গত, বছরে ১০ কোটি টাকা শামির আয় বলে দাবি করেছিলেন হাসিনের আইনজীবী। জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যের তার থেকে প্রতি মাসে স্ত্রী ও কন্যার জন্য মোট ১০ লক্ষ টাকা দিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় বলে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু, তাতে কাজ হয়নি। হাসিনের আইনজীবী বলেছেন, "শামির আয় নিয়ে আমাদের বক্তব্যের সমর্থনে কোনও প্রমাণ নেই বলে হাসিনের খোরপোশের দাবি খারিজ হয়েছে। আমরা ফের আবেদন করব।"

শামির আইনজীবী বরং হাসিনের বিরুদ্ধে প্রথম বিবাহের তথ্য গোপন করার অভিযোগ এনেছেন। তিনি যে এর আগেও বিয়ে করেছিলেন, তাঁর দুই কন্যা সন্তান রয়েছে, তা জানানো হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। ম্যারেজ সার্টিফিকেটের এক ফটোকপি জমা দিয়ে শামির আইনজীবী সেলিম রহমান বলেন, "ম্যারেজ সার্টিফিকেটে হাসিনকে অবিবাহিত দেখানো হয়েছে। এতেই প্রমাণিত যে আমার মক্কেলের কাছে বিবাহিত কিনা সেই তথ্য গোপন করা হয়েছিল।"

হাসিন আবার শামির বিরুদ্ধে একাধিক বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ এনেছেন। ক্রিকেটারের সঙ্গে এক পাকিস্তানি মহিলার সম্পর্কের কথা বলেছেন। শামির পরিবারের বিরুদ্ধেও মানসিক ও শারীরীক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন তিনি।